পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী বয়স অতিক্রম না করিতেই, শিক্ষার ও জ্ঞানোপার্জনের প্রবেশমার্গে উপস্থিত না হইতেই ভাল মন্দ দায়িত্ব ইত্যাদির সম্যক্ উপলব্ধি হইবার পূর্ব্বেই, সমাজ পরিণয়ের কঠোর নিগড়ে বাধিয়া, যুবকবৃন্দের ভবিষ্যৎ আকাশ গভীর কৃষ্ণ মেঘরাশিতে আবৃত করিয়া বসেন ৷ আশার ক্ষীণালোক সমুদ্রবক্ষস্থিত আলোক-গৃহের ( Light house ) ন্যায় সংসার কাননের বিহঙ্গ, তরুণবয়স্ক যুবকবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া হৃদয়ে যে মহং ভাব সকল শিক্ষার প্রভাবে প্রস্ফুটিত করিতেছিল, যে আলোকমালা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বৃহদায়তন ও সন্নিকটবর্ত্তী হইতেছিল, দারিদ্র্যময় পরিণীত জীবনের বিধম বাতাসংঘাতে হয়, সে আলোক নিবিয়া গেল, সংসারসমূদ্রে দিকভ্রান্ত হইয়া হিংসা দ্বেষ, স্বার্থ ও প্রতিযোগিতার প্রবল উর্ম্মিমালার তাড়নায়—ততোধিক সমাজের দারুণঝঞ্জাবাতে যুবকের জীবনতরি ডুবিল ! যে দেশের সমাজ, উত্থানপ্রয়াসী যুবকবৃন্দের মস্তকে এইরূপ লগুড়াঘাত করে, সে দেশের যুবক ক্ষিপ্তপ্রায় হইয়। "জীবিক জীবিকা” করিয়া ছুটিবে, তাহ বিচিত্র কি ? সে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাধি ব্যাধি হইবে ইহাই ত স্বাভাবিক। উরুণ যুবক যে মুহূর্ত্তে ত্রয়োদশবর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ষণ হইতে বাহির হইল, অমনি হয় আইনের দুয়ারে বটপত্র চর্ব্বণে অথবা ঘৃণ্য কেরাণীগিরিতে নিযুক্ত হইল—সেই দিন বহুশ্রমার্জিত বিদ্যার সমাধি হইল ! হায়! যে দেশে অর্থ ক্রিমি-কীট বলিয়া পরিগণিত হইত, যে দেশে নিষ্কাম জ্ঞানাঞ্জনই আজীবনব্যাপী কর্ম্ম ছিল, যে দেশের তপোবনে বিহঙ্গকলকণ্ঠের সঙ্গে সঙ্গে ব্রহ্মচারী শিষ্যবৃন্দের ব্রাহ্ম মুহূর্ত্তের আবৃত্তির স্বর কাননভূমিকে মুখরিত কুরিত্ব, সেই দেশেই আজ বিদ্যার্জন মসীবৃত্তি করিয়া জীবিকানির্ব্বাহের উপায় মাত্র ! আমরা পাশ্চাত্যদেশীয়দিগর্কে অর্থোপাসক বলিয়া ঘৃণা করিয়া থাকি, কিন্তু একটু তলাইয়া দেখিলেই বুঝিতে পারিব যে, উহা জম্বুকের প্রাক্ষা