পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মধ্য ইংরাজী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি স্বীয় বাসভবনে এক বালিকা-বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন, এবং সকলকে উৎসাহিত করিবার জন্য সর্বপ্রথমে স্বীয় পত্নী ও ভগিনীকে উক্ত বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি করিয়া দিয়াছিলেন।

হরিশ্চন্দ্র তাঁহার প্রজাগণকে অত্যন্ত ভালবাসিতেন। প্রজারা আসিয়া তাঁহার নিকট নিজ নিজ দৈন্য জানাইলেই তিনি তাহাদিগের খাজনা মাপ করিতেন; অথচ গভর্ণমেণ্টের রাজস্ব তাঁহাকে ধার করিয়া চালাইতে হইত। এই কারণে ক্রমে অনেক সম্পত্তি তাঁহার হস্তচ্যুত হইয়া যায়। হরিশ্চন্দ্রের সততা ও ন্যায়নিষ্ঠা সম্বন্ধে বহু ঘটনা অনেকের বিদিত আছে।

কলিকাতার আমহার্ষ্ট ষ্ট্রীটের-জমিদার বাবু অক্ষয়কুমার চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের পিতা রামতারণ চট্টোপাধ্যায় মহাশয় হরিশ্চন্দ্রের অন্তরঙ্গ বন্ধু ছিলেন। “হরিশ্চন্দ্রের বন্ধুত্বের প্রতি রামতারণের এত বিশ্বাস ছিল যে, তিনি কেবল মুখের কথায় বিনা দলিলে তাহাকে অনেকগুলি টাকা কৰ্জ দিয়াছিলেন। হরিশ্চন্দ্র যখন রামতারণের দেনা পরিশোধ করিতে অসমর্থ বিবেচনা করিলেন, তখন কাহাকেও কিছু না বলিয়া তাহার বাটীর সন্নিকটস্থ একখানি উৎকৃষ্ট জমিদারি রামতারণের বরাবর একখণ্ড বিক্রয় কোবালা লিখিয়া রেজেষ্টারী করিয়া রাখিয়াছিলেন। রামতারণ ইহার বিন্দু বিসর্গও জানিতেন না; পরে যখন হরিশ্চন্দ্রের সহিত তাঁহার সাক্ষাৎ হয়, হরিশ্চন্দ্র ঐ কোবালাখানি রামতারণের হস্তে প্রদান করিয়া দেনা হইতে অব্যাহতি প্রার্থনা করেন।”

কলিকাতা সমাজেও হরিশ্চন্দ্রের বেশ প্রতিপত্তি ছিল। তিনি British Indian Association নামক জমিদার সভার সভ্য ছিলেন এবং অনেক প্রধান প্রধান ব্যক্তির সহিত তাঁহার বন্ধুত্ব ছিল। তাঁহার