পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অন্নসমস্যা

 বাংলাদেশে কোন শিল্প-প্রদর্শনীর কথা শুনলেই বুকের ভিতর কেঁপে ওঠে। আমাদের শিল্পই নাই তার আবার প্রদর্শনী! বঙ্গশিল্পের প্রদর্শন আর বাংলার বিষাদকাহিনীর এক অধ্যায় উন্মোচন, একই কথা। একদিন ছিল,যখন বাংলার সূক্ষ্ম শিল্প সুদূর ভিনিস্ নগরের বাণিজ্যকেন্দ্রে আদৃত হ’ত। কিন্তু এখন প্রদর্শনীর আসরে নেমে অন্য সভ্য জাতির তুলনায় আমরা কি দেখাব? এ ত বেদ বেদান্ত উপনিষদ্ নয়, এ যে স্থূল-জড়জগতের কথা। প্রদর্শনীতে আমাদের জীবনধারণের উপযোগী নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু যা আমরা আপন হাতে প্রস্তুত করতে পারি তারই একত্র সমাবেশ করতে হয়। এখানে কৃতিত্বের পরিচয় দিতে এসে আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারি জীবনসংগ্রামে ক্রমাগত পরাজিত হয়ে বাঙালী দুর্দ্দশার কোন্ আবর্ত্তে আজ ঘুরপাক খাচ্ছে। বিদেশ থেকে বস্ত্রের আমদানী না হলে আমাদের লজ্জা নিবারণ হয় না, দিয়াশালাই না এলে আমাদের সন্ধ্যার প্রদীপ জ্বলে না। ষ্টীম এঞ্জিন থেকে সূচ সূতা পর্য্যন্ত সকল রকম জিনিষের জন্য আমরা পর-প্রত্যাশী। উঠ্‌তে বস্‌তে খেতে শুতে এমন পরবশ আর কোন জাতি আছে কিনা জানি না। যুদ্ধের সময় আমদানি বন্ধ হল; জার্ম্মাণী, ইংলণ্ড, ফ্রান্স প্রভৃতি দেশ থেকে জিনিষপত্র নিয়মিতরূপে না আসায় বিদেশী প্রতিযোগিতা অনেকটা কমে গেল। কিন্তু আমরা এমনই অক্ষম যে সে-সুবিধার কোন ব্যবহারই