পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

শরীরপুষ্টির যা প্রধান উপাদান, তা কয়েক বছর পরে দেশে আর পাওয়া! যাবে না এমন লক্ষণ দেখা দিয়েছে। খাদ্যদ্রব্য ত এই প্রকার দুর্ম্মূল্য, তার সঙ্গে এই অল্প আয়ের মধ্যে আবার কাপড় জামা জুতা লোকলৌকি‍কতা এবং ভদ্রয়ানার আর পাঁচরকম উপকরণ আছে, তার উপর যখন পুত্রের উচ্চশিক্ষা ও কন্যার বিবাহের কথা এসে পড়ে তখন বুঝতে পারা যায় আমরা দুর্দ্দশার কোন স্তরে নেমে গেছি। আমাদের পেট ভ’রে খাওয়া হয় না, বাড়ীতেও না, বাহিরেও না। কলকাতা বা মফঃস্বলের কলেজ-মেসে ঘর ভাড়া বাদ ন্যূনকল্পে ১৫৲ টাকা খরচ পড়ে, তা’তে ডাল ভাত আর একটি তরকারী ছাড়া অন্য কিছুর বন্দোবস্ত হয় না। একজন ছাত্রের মোট খরচ ৩৫।৪০ টাকার কমে হয় না। এইরূপে শাকান্ন আহারের ফলে শরীর নিস্তেজ হয়ে গেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি সাংঘাতিক ব্যাধি বুকের উপর পাথর হয়ে চেপে বসে। সার শঙ্করন্ নায়ার বলেছেন, গত কয়েক মাসে ভারতবর্ষে ইনফ্লুয়েঞ্জা ৬০ লক্ষ লোককে গ্রাস করেছে। সমগ্র ভারতে প্রতিবর্ষে ১২ লক্ষ লোক ম্যালেরিয়া রাক্ষসীর কাছে বলি হয়। এ সকলের মূলে দারিদ্র্য ও অজ্ঞতা। ডাঃ বেণ্ট্‌লি বলেন, ম্যালেরিয়া গরীবের রোগ! অনেকদিন ধরে পুষ্টিকর আহারের অভাবে লোক বারবার এই রোগে আক্রান্ত হয়। কল্‌কাতায় যক্ষ্মা রোগ বেড়ে চলেছে। শিশু যতগুলি জন্মায় তার এক তৃতীয়াংশ এক বৎসর বয়স হবার আগে মৃত্যুমুখে পতিত হয়। গত পাঁচ বৎসরে কল্‌কাতায় বাড়ীভাড়া শতকরা ২০%৲, বেড়েছে। এদিকে সাধারণ গৃহস্থের আয় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ। কাজেই এঁদো গলিতে অন্ধকার বাড়ী ভাড়া করে থাকতে হয়; সেঁতসেতে মেজে, অষ্ট প্রহর দরজা বন্ধ পাছে আবরু নষ্ট হয় বা ছেলে গাড়ী চাপা পড়ে। বাতাস রৌদ্র ও আলোক, যা গরীবের প্রতি বিধাতার দান, কল্‌কাতায়