পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

এ কি ভীষণ সমস্যা! আবার যিনি গ্রাজুয়েট্ হয়েছেন তিনি ভাবেন আইন পড়্‌তে না গেলে মহা অপরাধ হবে, আর জিজ্ঞাসা কর্‌লে বল্‌বেন “পাশটা করে রাখি।” আজকাল জেলার সদরে বা মহকুমায় উকিলরা কি রোজগার করেন, তাঁদের কজন অন্ন পান এবং কজন গাছতলায় কেরোসিনের বাক্সের উপর বসে দিন কাটান এরূপ কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কর্‌লে বিজ্ঞ ব্যক্তি উত্তরটা কানে-কানে দেবেন—কারণ সেটা সাধারণের বড় প্রীতিকর হবে না। স্যর্ আশুতোষ প্রতিভাশালী পণ্ডিত, শিক্ষা বিস্তারের জন্য অনেক করেছেন—এ সবই স্বীকার করি। কিন্তু আইন কলেজ সম্বন্ধে তাঁর সঙ্গে আমার বন্‌ল না। আমায় যদি কেউ একদিনের জন্যও কলকাতার সর্ব্বময় কর্ত্তা (Dictator) করে, তবে “ল-কলেজ”টাকে আমি আগে ভূমিসাৎ করি; অন্ততঃ দশবছরের জন্যে আইন পড়া উঠিয়ে দিই। কারণ তা হলে উপোষী উকীলদের অন্ন হ’তে পারে। আর ব্যাধির শেষ কি এইখানে? এদেশের ছাত্র বি-এল্ পাশ করে ভাবেন এম্-এল্ হবেন। যেন বিধাতা তাঁদের সৃষ্টি করেছেন শরীর ও স্বাস্থ্য নষ্ট ক’রে পরীক্ষা পাশ কর্‌তে এবং যম-সদনে যেতে।

 ৬০।৭০ বৎসর আগে কল্‌কাতার হৌসের বাঙ্গালী মুৎসুদ্দী ছিলেন। উদাহরণ-স্বরূপ ললিতমোহন দাস, গোরাচাঁদ দত্ত, প্রভৃতির নাম করা যেতে পারে। তাঁরা মাসে আট দশহাজার টাকা উপার্জ্জন কর্‌তেন অর্থাৎ এখনকার প্রায় বিশহাজার টাকা। কিন্তু আজকাল সে-সব উপন্যাসের কথা হয়ে গেছে! ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি কল্‌কাতায় প্রথম কার্‌বার করেন বাঙ্গালীর সঙ্গে! বাংলার শিল্পজাত দ্রব্য তাঁরা বাঙ্গালীর নিকট কিন্‌তেন। তখন ব্যবসা ছিল বাঙ্গালীর হাতে। এমন কি ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্দ্ধে বাঙ্গালীর সাহায্য ব্যতীত ইউরোপীয়