পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

৷৶৹

বন্ধুগণের মধ্যে কৃষ্ণদাস পাল, শিশির কুমার ঘোষ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, দিগম্বর মিত্র প্রভৃতি অনেক প্রধান ব্যক্তির নাম করা যায়।

 ১৩০২ সালের (ইং ১৮৯৫) ২৭শে বৈশাখ তারিখে প্রায় সত্তর বৎসর বয়সে হরিশ্চন্দ্রের মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তিনি পাঁচ পুত্ত্র ও এক কন্যা রাখিয়া গিয়াছিলেন।

 হরিশ্চন্দ্র ভাড়াশিমলা গ্রামে নবকৃষ্ণ বসু মহাশয়ের কন্যা ভুবনমোহিনীকে বিবাহ করিয়াছিলেন। ভুবনমোহিনী যেরূপ অসামান্য রূপবতী সেইরূপ অসামান্য গুণবতীও ছিলেন। তাঁহার মধুর প্রকৃতি ও কোমল হৃদয় নিতান্ত পরকেও আপন করিয়া লইত। প্রফুল্লচন্দ্র আজ যে পরোপকার ব্রত গ্রহণ করিয়াছেন, তাহার দীক্ষা তাঁহার পিতামাতার নিকটেই হইয়াছিল। ১৩১১ সালে ভুবনমোহিনীর মৃত্যু হয়।

 হরিশ্চন্দ্রের জ্যেষ্ঠ পুত্ত্র জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র ১২৬৩ সালের ১৭ই বৈশাখ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। ওকালতি পরীক্ষা পাশ করিয়া তিনি ডায়মণ্ডহারবারে ওকালতি করেন। বর্ত্তমানে বার্দ্ধক্যবশতঃ অবসর গ্রহণ করিয়াছেন।

 নলিনীকান্ত হরিশ্চন্দ্রের দ্বিতীয় পুত্ত্র; ১২৬৫ সালে ইঁহার জন্ম হয়। ক্যাম্বেল মেডিক্যাল স্কুলে প্রবেশ করিয়া তিনি চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন এবং তথায় শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া বাটীতে গিয়া চিকিৎসা ব্যবসায় আরম্ভ করেন। অল্পদিনের মধ্যেই সুচিকিৎসক বলিয়া ইঁহার খ্যাতি প্রচারিত হইয়া পড়ে। কিন্তু ক্যাম্বেলের বিদ্যায় ইনি অধিক দিন সন্তুষ্ট থাকিতে পারেন নাই। তিনি বম্বে মেডিক্যাল কলেজে ৬ বৎসর অধ্যয়নের পর ডাক্তার হইয়া বাড়ী আসেন। তাঁহার সার্ব্বজনীন সামাজিকতা এবং দেবপ্রকৃতিক সহৃদয়তা তাঁহাকে লোকমাত্রেরই বরণীয় ও ভালবাসার বস্তু করিয়া রাখিয়াছে।