পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫০
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

 বজ্‌বজ্ থেকে আরম্ভ ক’রে ত্রিবেণী পর্য্যন্ত গঙ্গার দুধারে সর্ব্বশুদ্ধ ৮১টি পাটের কল আছে; কলের মালিক সবাই ইংরেজ। তাঁরা শতকরা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ডিভিডেণ্ড (dividend) দিচ্ছেন। এক-একটা পাটের কলের মূলধন ২৫।৩০ লক্ষ টাকা হবে। তবেই দেখা যাচ্ছে প্রত্যেক পাটের কল ২৫।৩০ লক্ষ টাকা লাভ করেছে। আমাদের বর্দ্ধমানের মহারাজার আয় অধিকাংশ পত্তনী বিলি বলিয়া ১২ লক্ষ টাকার বেশী হবে কি না সন্দেহ। শুনেছি দ্বারভাঙ্গার মহারাজার ২৫।৩০ লক্ষ টাকা আয় হবে, অর্থাৎ এক-একটি পাটকলের আয় আমাদের দেশের সর্ব্বশ্রেষ্ঠ জমিদারের আয়ের সঙ্গে সমান। এই কয় বৎসরের সমস্ত পাটের কলে বৎসরে ১০।১২ কোটি টাকা রোজগার করে কলওয়ালারা বিদেশে নিয়ে গেছেন। এ লাভের কার্‌বারে এদেশীদের কোন হাত নেই,—সব বিদেশীর। ভারতবর্ষের লোকেরা পাটকলের কুলি। পাটকলের আশেপাশে বস্‌তির মধ্যে তারা কি জঘন্য অবস্থায় দিন কাটায় তা সকলেই জানেন।

 কল্‌কাতায় দশহাজার ভাটিয়া আছেন। তাঁদের সকলেরই কার্‌বার আছে। সবাই অবস্থাপন্ন, তাঁদের মধ্যে কেরাণী নাই। কলকাতায় মাড়োয়ারীর সংখ্যা ৯০,০০০ থেকে ১০০,০০০ মধ্যে। সকলেই সঙ্গতিপন্ন। যার খুবই কম আয় তিনি মাসে ১০০ টাকা রোজগার করেন। আর কল্‌কাতার লক্ষপতিরা যে অনেকেই মাড়োয়ারী, একথা কারও অবিদিত নাই। ছেলে নকুরী (চাক্‌রী) কর্‌বে এরূপ ভাবতে মাড়োয়ারী অপমান বোধ করেন। দিল্লীওয়ালাও কল্‌কাতায় অনেক আছেন। মুরগীহাটায় তাঁদের বড় বড় দোকান। আমড়াতলার গলিতে প্রকাণ্ড দ্বিতল ত্রিতল বাড়ী তাঁরা হাজার, দেড়হাজার টাকায় ভাড়া করেছেন। সেখানে বিস্কুট, ওষুধ, দিয়াশালাই প্রভৃতি জিনিষ বোঝাই