করা আছে। এসব বিদেশী মালের এঁরা একমাত্র এজেণ্ট। পূর্ব্ববাংলা, সুদূর দিল্লী ও রেঙ্গুন, প্রভৃতি স্থানে এঁরা পাইকারী হিসাবে মাল পাঠান। এঁদের আয় যথেষ্ট। দিল্লীওয়ালা মুসলমান ব্যবসা বোঝেন। বাঙ্গালী মুসলমান বোঝেন না। তাঁরা হিন্দুদের চেয়ে এই বিষয়ে নির্জ্জীব ও উপায়বিহীন।
তারপর আমাদের যৌথ কারবার (Joint Stock Company) নেই বললেই চলে। এরূপ কারবার এদেশে চলে না, কারণ আমরা পরস্পর বিবাদ করি, হিংসা করি, আপনাদের বিশ্বাস করি না। কাজেই আমাদের অর্থ, শক্তি ও কৌশল সম্মিলিত হবার সুবিধা ও অবকাশ পায় না। যৌথ কারবারে ইংরেজ সফল হয়, আমরা হই না।
ব্যবসায়ক্ষেত্র থেকে এম্নি ক’রে সবদিকে হটে গেলে আমাদের অন্নসমস্যার মীমাংসা হবে না, অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ইংরেজ, মাড়োয়ারী, ভাটিয়া, দিল্লীওয়ালা—যাঁরা কলকাতার সকল প্রকারের ব্যবসা একচেটে করেছেন—তাঁদের চরণতলে বসে ব্যবসার প্রথম পাঠ আমাদের শিখতে হবে। তাঁরা যে উপায়ে কৃতী হয়েছেন আমাদেরও সেই উপায় অবলম্বন কর্তে হবে। আলস্য ও বিলাস ছাড়তে হবে। প্রথম ব্যবসা আরম্ভ করে মাড়োয়ারী কাপড়ের বস্তা পিঠে নিয়ে ফিরি করেন, গাছতলায় বিশ্রাম করেন। তাঁরা রেলগাড়ীতে তৃতীয় শ্রেণীতে চড়েন, পাঁচলক্ষ টাকা না হ’লে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উঠেন না। কিন্তু আমরা,—বাবুরা “দেড়া কেরায়াকা” গাড়ীতে উঠি, এদিকে পেটে অন্ন নাই। ব্যবসাক্ষেত্রে দাঁড়াতে হলে উদ্যম অধ্যবসায় ও কষ্টসহিষ্ণুতায় এঁদেরই পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলতে হবে—একথা যেন আমাদের শিক্ষাভিমানী পাশকরা, ছেলেরা কখনও বিস্তৃত না হন। কারণ সকল ক্ষেত্রেই শিক্ষানবিশীর একটা মূল্য আছে। ভূঁইফোঁড় বা না পড়ে