পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী

পণ্ডিত হবার মত ভয়ঙ্কর জিনিষ আর কিছুই নাই। বিশেষতঃ ব্যবসায়ক্ষেত্রে উত্থান পতন অতি ভয়ানক; এরূপ গভীর দায়িত্বপূর্ণ কাজে হাত দেবার আগে একটু শিক্ষার দরকার একথা আর বুঝিয়ে বলতে হবে না। অনভিজ্ঞ লোকের ব্যবসায়-চেষ্টা অল্পদিনের মধ্যেই নিষ্ফল হয়ে গেছে এমন দৃষ্টান্ত অনেক আছে। সুতরাং এ শিক্ষানবিশীকে আমাদের যুবকগণ যেন কখনও উপেক্ষার ভাবে না দেখেন।

 যুবকগণের প্রতি আমার নিবেদন, ফেল হলে তাঁরা যেন জগৎ অন্ধকার না দেখেন এবং ক্ষোভে ও দুঃখে শেষে আত্মহত্যা করে না বসেন। আর তাঁদের অভিভাবকদের হাতজোড় করে বলছি যে ছেলে ফেল্ হলে তাঁরা যেন হা হুতাশ না করেন, পোড়া কপাল দুরদৃষ্ট বলে নিজেকে ও পুত্ত্রকে ধিক্কার না দেন। আমাদের ছেলেরা পরীক্ষা পাশ করতে না পারলে যেন মহাপাতকী দস্যুর চেয়েও বিষণ্ণ হয়ে পড়েন। কি দুর্দ্দশা! যে ক’জন বাঙালী পাটের দালাল আছেন তাঁরা সব ফেলকরা ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বার বন্ধ করলে কি টাকা পয়সা বা মনুষ্যত্বের দ্বার বন্ধ হয়? আমি আজীবন ভেবেছি, নব্যবঙ্গের সব ছেলেদের আমি জানি। আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে জীবনে সফলতা লাভ করবার জন্যে গ্রাজুয়েট হবার কোন দরকার নেই। কিন্তু তাই বলে বিদ্যাশিক্ষার আবশ্যকতা নেই আমি এমন কথা বলছিনা। লেখাপড়া চাই। ইংলণ্ড, আমেরিকা প্রভৃতি দেশে উচ্চশিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা ও লোকশিক্ষার নানাপ্রকার বন্দোবস্ত আছে। তারা লেখা পড়া শিখে শিল্প বাণিজ্য ব্যবসায় প্রভৃতি নানা কাজে লেগে যায়। তারা জানে Knowledge is power জ্ঞানই শক্তির উৎস। রাসায়নিক পরীক্ষাগারে বর্ত্তমান যুদ্ধের ফলাফল অনেক পরিমাণে নির্দ্ধারিত হয়েছে। প্রকৃত শিক্ষা চাই, কিন্তু