আয়রন্সাইড্ বার্ক্মায়ার এঁরা অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ উপাধির কোন ধারই ধারেননি। তাই বলে এঁদের অশিক্ষিতও বলা চলে না, এঁরা সম্পূর্ণ শিক্ষিত; এঁদের শিক্ষার মূলে স্বাবলম্বন। এঁরা পাঠাগারে ব’সে বই পড়েন,—“নোট” পড়েন না। আমাদেরও নিজের চেষ্টায় শিখ্তে হবে ও আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যে প্রবেশ কর্তে হবে, শিল্পের উন্নতির দ্বার উন্মুক্ত করতে হবে, নইলে অস্বাস্থ্য ও অন্নাভাবে অচিরে বাঙালী জাতির অর্দ্ধেক ধ্বংস হয়ে যাবে। বর্ত্তমানে আমরা সামান্যভাবে কলকারখানা স্থাপন কর্তে ও নানাপ্রকার ব্যবসার কাজে প্রবৃত্ত হতে আরম্ভ করেছি। কিন্তু কোথাও এখনও রীতিমত সফলতার মুখ দেখ্তে পাইনি। এই কারণে অনেকে একটা আত্মঘাতী চীৎকার আরম্ভ করেছেন, বাঙ্গালীর দ্বারা কিছু হবে না। কিন্তু আজ ইউরোপ যে ব্যবসায়-ক্ষেত্রে একাধিপত্য লাভ করেছে তা পাঁচশ বছর বা ততোধিক কালের বংশপরম্পরালব্ধ অভিজ্ঞতার ফল এই কথাটা মনে রাখ্লে আমরা কা’রও গঞ্জনাবাক্যে নিরুৎসাহ হয়ে পড়্ব না। আর আপনাদের চেষ্টায় কল কারখানা স্থাপন কর্তে না পার্লে ইংলণ্ড, আমেরিকা প্রভৃতি স্থান হতে অনেক বাঙালী যুবক শিল্প ও বাণিজ্য সম্বন্ধে যে জ্ঞান নিয়ে দেশে ফিরে আসছেন সে জ্ঞান কর্ম্মক্ষেত্রের অভাবে সম্পূর্ণ নিরর্থক হবে। বিদেশ থেকে কোন একটা শিল্পে পারদর্শিতা লাভ ক’রে ফিরে এলেই ত হবে না—তাকে কাজে লাগাবার জন্য ক্ষেত্র রচনা কর্তে হবে। অতএব বিশেষ অনুধাবন ক’রে দেখুন; আজ আমাদের জীবন-মরণের সমস্যা উপস্থিত। চাক্রী চাক্রী করলে আর চলবে না; এ পথ ছেড়ে দিয়ে ভিন্নপথ, স্বাবলম্বনের আত্মনির্ভরতার পথ ধর্তেই হবে। আমি বাঙলার তথা ভারতবর্ষের নানাস্থানে ভ্রমণ করেছি। দেশে যাতে বিজ্ঞানচর্চ্চা হয় এবং
পাতা:আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী.djvu/৮৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
আচার্য্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের প্রবন্ধ ও বক্তৃতাবলী