পাশ করাটাই একমাত্র লক্ষ্য হওয়ায় শিক্ষাপ্রণালীর এই শোচনীয় দুর্দ্দশা হয়েছে। আবার পল্লীগ্রামের স্কুলে বেশী ছেলে পাশ না হলে বেচারী হেডমাষ্টারকে কর্ত্তৃপক্ষ তাড়া দেন—সে এক বিষম মুস্কিল। কেউ বা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন আমার স্কুলে এতগুলি ছাত্র পাশ হয়েছে, অতএব চ’লে এস; ইত্যাদি। কলেজের দ্বারে এই যে শত শত ছাত্র আঘাত করছে, মাথা খুঁড়ছে, এরা কি প্রকৃত জ্ঞানপিপাসু বিদ্যার্থী অথবা ডিগ্রী পার্থী মাত্র—উদ্দেশ্য গলাধঃকরণ, উদ্গীরণ ও ডিগ্রীগ্রহণ। আমাদের ছেলে হলে চার বৎসর বয়স হতে বি-এল্-এ ব্লে আরম্ভ হয় আর চব্বিশে চর্ব্বণ শেষ। কিন্তু এতে যে পরিমাণ যোগ্যতা লাভ হয় সঙ্কটপূর্ণ সংসার পথে চল্বার পক্ষে তা একেবারেই যথেষ্ট নয়। যে-কোন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা কর্লেই,জান্তে পারা যায় যে, সে চায় পাশ কর্তে, জ্ঞানলাভ করতে নয়। শিক্ষককে ছাত্ররূপ মনিবের মন জুগিয়ে চল্তে হয়, কারণ পাশ কর্বার যা উপযোগী তাই তিনি পড়বেন, অন্য কিছু দেখবেন না অন্য কথা কানে তুল্বেন না। পঠিত বিষয় আত্মসাৎ ক’রে তা থেকে রসরক্ত সঞ্চিত হলে চিত্তোৎকর্ষ সাধিত হতে পারে। কিন্তু ছাত্র তা চায় না—সে চায় গ্রামোফোনের মত মুখস্থ বুলি উদ্গীরণ ক’রে ডিগ্রী নিতে। কিন্তু অন্নসংস্থানের জন্যে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপের উপর নির্ভর করা ব্যতীত উপায়ান্তর নেই, এই ভয়ঙ্কর ভ্রান্তির হাত থেকে মুক্তিলাভ ক’রে ব্যবসা বাণিজ্য কৃষি শিল্পের দিকে মনোনিবেশ কর্লে ছাত্রও বাঁচতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ও ভারমুক্ত হতে পারে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ-ফেলের অঙ্কপাতে ভবিষ্যৎ জীবনের শুভাশুভের গণনা না ক’রে যদি আমাদের যুবকগণের আশা উৎসাহ ও বুদ্ধি অন্য ক্ষেত্রে নিয়োজিত হয় তবে শুভ ফল হবে—সফলতা লাভ হবে—সন্দেহ নেই। অভাব ও অস্বাস্থ্যের তাড়নায় আমাদের জাতীয় জীবনের এমন