জন্য। আমেরিকা যাবার ইচ্ছা আমার মোটেই দমল না। ইউরোপ ভ্রমণ সমাপ্ত করে দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে যখন দরকারী টাকা যোগাড় করতে সমর্থ হলাম, তখন আমেরিকা যাবার জন্য উদগ্রীব হয়ে পড়লাম। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা হতে আমেরিকায় যাবার পথ আমার রুদ্ধ ছিল। আমাদের দেশের দক্ষিণ আফ্রিকার এজেণ্ট জেনারেলগণ সে কথা ভাল করে জানতেন কিন্তু কখনও এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করেন নি। যদি তার প্রতিবাদ করতে যেতেন, তবে তাঁদের নিশ্চয়ই কাজে ইস্তফা দিতে হত। চাকরির মায়া ছেড়ে যদি চার পাঁচজন এজেণ্ট জেনারেল এই অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ করতেন, তবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বুয়ার সরকারের কান খাড়া হয়ে উঠত। ভারতের গণ্যমান্য লোক বুঝতেন দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতবাসীর প্রকৃত অবস্থা। ফলে হয়ত আমাদের কষ্টের অনেকটা প্রতিকার হত।
আমাদের দেশের লোক শুনেছে দক্ষিণ আফ্রিকাতে ‘কালার বার’ আছে। তার স্বরূপ কি তা অনেকেই বুঝতে পারে না, যারা বুঝেছে তারা আবার বলতেও চায় না। দক্ষিণ আফ্রিকাতে ভারতীয়দের মাঝে দুটি দল আছে; সে দল হিন্দু-মুসলমানের নয়―কংগ্রেস এবং কলোনিয়্যাল-বর্ণ (Colonial Born)। দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয় কংগ্রেসের জন্ম দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। কলোনিয়্যাল-বর্ণ অর্থাৎ উপনিবেশে জাতদের দল এবং ইণ্ডিয়ান এসোসিয়েশনের জন্মদাতা হলেন মিঃ মণীলাল গান্ধী। পিতা যা গড়েছেন পুত্র তা ভাংতে না পেরে নতুন দল গঠন করেছেন। আমি এই দুটা প্রতিষ্ঠান হতেই পৃথক্ভাবে থাকবার জন্যে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারিনি।
অনুনয় বিনয় করার অভ্যাস আমার নাই। দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতীয় কংগ্রেস দল কিন্তু তার অনেকটা পক্ষপাতী। ‘কালার বার’ যারা নীরবে সহ্য করতে পারে, তারা অনুনয় বিনয়ের পক্ষপাতী না হয়ে