পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজকের আমেরিকা

কারো কাছে কিছুই ভিক্ষা চায় না। অথবা সাহায্য পাবার জন্য প্রত্যাশাও রাখে না।

 যাদের জন্ম ভারতে হয়েছে কিংবা ভারতে যারা অনেক দিন থেকেছে তাদের মতিগতি অন্য ধরণের। তারা ধর্মের কথা বলে, টাকা জমায় এবং আরও ধনী হবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে। ঔপনিবেশিকরা মদ খেয়ে মাতাল হয়ে সভা করে, দরকার হলে লড়াই করে, তারপর বুয়ার সরকারকে মাঝে মাঝে হুমকিও দেখায়। মহাত্মা গান্ধী তাদেরই অনুগ্রহে দক্ষিণ আফ্রিকাতে সত্যাগ্রহ করে কৃতকার্য হয়েছিলেন। আমার সৌভাগ্য কি দুর্ভাগ্য বলতে পারি না, অনিচ্ছায় সেই দলেই মিশে পড়তে বাধ্য হয়েছিলাম।

 ডারবান, ইস্টলণ্ডন, পোর্ট এলিজাবেথ এবং কেপ্‌টাউনই হল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রসিদ্ধ বন্দর। যাত্রী জাহাজ ডারবান এবং কেপটাউনে ছুঁয়ে থাকে; কার্গোবোটগুলি অন্য দুই বন্দরে নিয়মিতভাবে এসে দাঁড়ায়। আমেরিকা যাবার ভিসা পেয়েছিলাম, জাহাজ ভাড়ার টাকা পকেটে ছিল, তবুও আমার পথ বন্ধ ছিল। ধর্ম আমাকে এখানে সাহায্য করতে পারে না, আমার টাকা এখানে অচল, কারণ টাকারও মূল্যের তারতম্য আছে। সাদা লোকের হাতে আমারই হাতের টাকা যখন চলে যায় তখন তার মূল্য বাড়ে। অবশ্য এরূপ তারতম্য অনেকে পছন্দ করেন না। আমি স্বচক্ষে দেখেছি অনেক ইংলিশম্যান্‌ অগ্রপশ্চাৎ না ভেবে একগুঁয়েমী করে এর প্রতিকার করবার চেষ্টায় উঠে পড়ে লাগেন, কিন্তু রোগের কারণ না জেনে ঔষধ দেওয়ায় যে ফল হয় এক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়ে থাকে।

 ডারবানে আমেরিকা যাবার টিকেট কেনার চেষ্টা করতে লাগলাম, কিন্তু টিকেট কেনা আমার দ্বারা সম্ভবপর হয় নি। জাহাজের এজেণ্টরা