কাছেই দাঁড়িয়েছিল। সাদাদের বুটের লাথির ভয় তারা রাখে না। তারাই আমাকে লাল নীল সবুজ সাদা নানা রংএর ফিতা দিয়ে গিয়েছিল উপরের ডেক হতে ছাড়বার জন্যে। আমি ফিতাগুলি ছাড়লাম। কয়েকটা ফিতা তারা ধরল এবং আমার মুখের দিকে সকরুণ দৃষ্টি দিয়ে তাকিয়ে রইল। জাহাজ নড়ে উঠল। ধীরে ধীরে জেটি ছেড়ে বাহির সমুদ্রে এসে মোড় ফিরেই দম বাড়িয়ে দিল। জাহাজের খালাসী থেকে কাপ্তান সকলেই শ্বেতকায়, তারা সকলেই আপন আপন কাজে ব্যস্ত হয়ে উঠল।
আটলাণ্টিক মহাসাগরে যে সকল জাহাজ চলাফেরা করে, তাদের কতকগুলি আইন মানতে হয়। সর্বপ্রথম আইন হল, ডেক প্যাসেন্জারের কোন ব্যবস্থাই নাই। দ্বিতীয় নিয়ম হল, এশিয়াটিক ফুড অর্থাৎ চীনা খাবার কোনও যাত্রীকে খেতে দেওয়া হয় না। জাহাজের টিকেট কেনার মানেই হল, সর্ববাদীসম্মত খাদ্য তোমাকে খেতেই হবে।
আমি টিকেট কিনেছি তৃতীয় শ্রেণীর। প্রশান্ত মহাসাগরের, চীন সমুদ্র তীরের এবং ভারত মহাসাগরের জাহাজে তৃতীয় শ্রেণীকেই ডেক প্যাসেন্জার বলা হয়। এখন আটলাণ্টিক মহাসাগরের ডেক প্যাসেন্জার বা তৃতীয় শ্রেণীর লভ্য সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য সম্বন্ধে একটু সংবাদ দিতে ইচ্ছা করি। কেপটাউন হতে সাউথহাম্টন তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়া চৌত্রিশ পাউণ্ড অর্থাৎ আমাদের দেশের সাড়ে চারশ টাকা। আমাদের কেবিনে দুখানি বার্থ, তাতে বিছানা পরিপাটিরূপে সাজানো ছিল। তিনটি আলো ছিল। একটা কেবিনের মধ্যস্থলে, আর দুটা আলো প্রত্যেক বালিশের পেছনে। বই পড়তে বেশ আরাম। ছোট শিকলে টান দিলেই বাতি জ্বলে উঠে, আবার সেই ছোট শিকলে টান দিলেই বাতি নিবেও যায়। ভিতরেই হাতমুখ ধোবার জন্য গরম এবং ঠাণ্ডা জলের ব্যবস্থা আছে, তাছাড়া পাঁচটা