পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



আজকের আমেরিকা
১১

কেবিনের পরই একটি করে স্নানের ঘর। ডাইনিং রুম, স্মোকিং রুম, লাইব্রেরী, খেলবার নানারূপ সরন্‌জাম, রুম স্টুয়ার্ট, স্নানাগারের স্টুয়ার্ট―এসকল ত ছিলই। দৈনিক সংবাদপত্র জাহাজে ছাপান হ’ত এবং সকাল বেলায় ঘুম ভাংতেই প্রত্যেকের হাতের কাছে একখানা করে সংবাদপত্র দেবার ব্যবস্থা ছিল। এর জন্য দাম দিতে হ’ত না। ডিনারের পর সিনেমা দেখান হ’ত। প্রত্যেক কেবিনেই কলিংবেল-এর ব্যবস্থা ছিল। বেল বাজালেই বয় দৌড়ে আসত। কোনও এক সময়ে ইংলণ্ড ও স্পেন হতে যখন যাত্রীরা উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকায় যেত তখন ছিল ডেক প্যাসেন্‌জারের ব্যবস্থা। এতে অনেক লোক পথেই মরত, আর যারা বেঁচে থাকত তারাও আমেরিকায় পৌঁছবার পর কয়েক মাসের মাঝেই মরত। এরূপ মৃত্যু হবার পর ডেক প্যাসেন্‌জার ব্যবস্থা উঠিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের সমুদ্রে গরম বাতাস থাকার জন্য ডেক প্যাসেন্‌জারের ব্যবস্থা এখনও রয়েছে, এবং আমাদের নিয়ম কানুন অর্থাৎ ধর্মের গোড়ামী থাকায় আমরাও ডেক প্যাসেন্‌জারী পছন্দ করি। এতে আমাদের কত হীন হতে হয়, কত অপমান সহ্য করতে হয় তার ইয়াত্তা নাই। এসব জেনে শুনেও আমরা এসবের প্রতিবাদ করি না।

 জাহাজ এখন গভীর সমুদ্রে। আমার কেবিন দেখা হয়েছে, এবার আমাকে জাহাজ দেখতে হবে। তাই জাহাজের একদিক থেকে অন্যদিকে দেখতে দেখতে এগোতে লাগলাম। প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণী সবই দেখলাম। দক্ষিণ আফ্রিকার যে কোনও শহরে জাপানী এবং তুরুক ছাড়া অন্য কোন এসিয়াবাসী বুক ফুলিয়ে হাঁটতে পারে না, আমি কিন্তু হেঁটেছি। জাহাজে বুক ফুলিয়ে হাঁটতে ভয় পাব কেন? কিন্তু সকলের তা সহ্য হয় না। দু’একজন এরই মধ্যে জিজ্ঞাসা করেছেন, “এই, তুই কি প্যাসেন্‌জার?” আমার জবাব ছিল, “হ্যাঁ, তোর মতই!” আমার মনে