পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
আজকের আমেরিকা

হয় এই লাইনে যে সকল ভারতবাসী ভ্রমণ করেছে, তাদের মাঝে আমিই বোধ হয় সর্বপ্রথম অভদ্র এবং স্বাধীন যাত্রী।

 আমার ইচ্ছা হল কেবিনে যে ইণ্ডিয়ান ভদ্রলোক এসেছেন তার সংগে একবার দেখা করি এবং কথা বলি। কিন্তু কেবিনে এসে তাঁর দর্শন পেলাম না। আমি স্মোকিং রুমে বসে একটু আরাম করেই বাইরে এসে চায়ের আদেশ দিলাম। চায়ের তখনও সময় হয় নি, তবুও বয় চা এনে হাজির করল এবং বলল, চারটার সময় চায়ের ভাল বন্দোবস্ত হবে। তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় দিলাম।

 একদল যাত্রী আমারই কাছে ভিড় করে বসে নানা রকমের গল্প-গুজবে মশগুল হয়ে উঠল, কিন্তু আমার তা মোটেই ভাল লাগছিল না। আমার মন যেন ক্রমশই নিরুৎসাহে দমে আসছিল। আমি যে গদি আঁটা বেন্‌চিটাতে হেলান দিয়ে বসেছিলাম, তাতে প্রচুর স্থান থাকা সত্ত্বেও কেউ আমার কাছে এসে বসছিল না অথচ অন্যান্য আরাম কেদারায় ঠেলাঠেসি করে তারা বসছিল। তার কারণ আর কিছুই নয়, আমার সংগে বসলে ওদের সম্মান থাকবে না।

 কেবিনে এসে দেখি ভারতীয় ভদ্রলোকটি মুখ নত করে বসে আছেন। তাঁকে আমার পরিচয় দিলাম। তিনি তাঁর পরিচয় সংক্ষেপে দিয়ে আমার বোঁচকার দিকে দৃষ্টি ফিরালেন এবং বললেন, “এরূপ পুঁটলি নিয়ে বিলাত চলেছেন, এটা দেখে লোকে যে হাসবে!” আমি তার কথার কোন প্রতিবাদ না করে জিজ্ঞাসা করলাম, “ডাইনিং রুমে আপনি কোন্ দিকে বসে খান?” গম্ভীর হয়ে বললেন―কেবিনে তাঁর খাবার এনে দেওয়া হয়। আমি বললাম, “কেবিন তো শোবার জন্য খাবার জন্য ডাইনিং হল রয়েছে, সেখানেই গিয়ে আমরা খেয়ে আসতে পারি।” তারপরই বললাম, “চলুন এক গ্লাস বিয়ার খেয়ে আসি।” ভদ্রলোক দুই চোখ কপালে