তুলে বললেন―যান, অপমানিত হয়ে আসুন। ভদ্রলোকের কথার ভাবে বুঝতে পারলাম স্মোকিং রুমে গেলেই অপমানিত হতে হবে, তাই তাঁকে আশ্বাস দিয়ে বললাম, যদি কিছু ঘটে তার জন্য আমি দায়ী হব আপনি চলুন। তিনি বিয়ার খেতে রাজি ছিলেন কিন্তু স্মোকিং রুমে যেতে রাজি ছিলেন না, তবুও একরকম জোর করেই তাঁকে বিয়ারের দোকানে নিয়ে গিয়েছিলাম। স্মোকিং রুমে গিয়েই দু’গ্লাস বিয়ারের জন্য আদেশ করলাম। বোধ হয় পনের মিনিট পর বিয়ার নিয়ে একজন ইংরেজ ছোকরা এল। তাকে বিয়ারের দাম বাবদ এক শিলিং দিয়ে আর একটি শিলিং দিলাম বখ্শিস স্বরূপ। অন্যান্য যাত্রীরা তিন পেনীর বেশী কেউ বখ্শিস দেয়নি সেদিকে আমার লক্ষ্য ছিল। এখনও পৃথিবী টাকার বশ। এক শিলিং বখ্শিস পেয়ে ইংলিশ বয় আমাদের অনুগত হয়ে পড়ল এবং কোন কিছুর আদেশ দিলেই সর্বাগ্রে আমাদের হুকুমই তামিল করতে লাগল।
আমার কেবিন-সাথীটি হলেন ব্যবসায়ে ধোপা। তাঁর আয় বৎসরে পাঁচ হাজার পাউণ্ড। তিনিও প্রথম শ্রেণীর টিকেট কিনতে পারেননি। তৃতীয় শ্রেণীর টিকেট কিনতে পেরেছিলেন, আমারই টিকেটের লেজ ধরে। যাহোক, আমাদের মাঝে মোটেই মনের মিল ছিল না―কারণ তিনি ধনী আর আমি দরিদ্র। এই যে শ্রেণীযুদ্ধ, আজ পর্যন্ত কেউ তাড়াতে পারেনি, এড়াতেও পারা যায় না। শ্রেণীযুদ্ধের অবসান হয়েছে রুশিয়ায়, লেনিনের ভালবাসায় এবং ষ্ট্যালিনের অক্লান্ত পরিশ্রমে। যদিও আমরা দুজনই ইণ্ডিয়ান, দুজনের একই ধর্ম, কিন্তু আমাদের আকাশ-পাতাল ভেদ রয়েছিল। ধনী শতকষ্ট সহ্য করতে রাজি, কিন্তু যার রক্ত শোষণে ধনীর শরীর পুষ্ট হয়েছে, তার কাছে বসতেও রাজি নয়। আমার ধনী বন্ধু বুয়ারদের লাঞ্ছনা নিঃশব্দে হজম করে