পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



১৬
আজকের আমেরিকা

খুলে আমার সংগে কথা বলতে লাগল। কিন্তু আমার বন্ধুটি কোন কথাতেই ছিলেন না। কি করে বড় একটা কাপড় কাচার মেশিন কিনবেন এবং কি করে তার কলকব্জা ঠিক হবে, সেই নিয়েই তাঁর মন পড়ে রয়েছিল।

 আমি সকলের সংগে অবাধে মিলামিশা করতে লাগলাম। ইউরোপীয়ান, বয়ার সকলেই আমার সংগে নানা কথা বলতে লাগল। তাদের প্রধান জিগ্‌গাস্য বিষয় ছিল, মহাত্মা গান্ধীর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রভাব ও তাঁর কৃতকার্যতা সম্বন্ধে। সেই সংগে সুভাষ ও জওহরলালের কথাও এসে পড়ছিল। আমি অনেক সময় তাদের কাছে রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে যেসকল তীব্র মন্তব্য করতাম, সে কথাগুলি বোধ হয় তাদের মনে বেশ লাগত। আমার চিন্তার ধারা ও কথা শুনে ওরা ভাবত, হয়ত আমি অনেক বই পড়েছি। তাই একজন জিজ্ঞাসা করেছিল আমি কার্লমার্কস্‌এর বই পড়েছি কিনা। আমি যখন বলতাম কার্লমার্কস্‌এর বই চোখেও দেখিনি তখন তারা অবাক হয়ে যেত। আমি তাদের বুঝিয়ে বলতাম, দেশভ্রমণের অভিজ্ঞতাই আমাকে এই দৃষ্টিভংগী এনে দিয়েছে।

 আমি অনেক সময়ই দেশের কথা ভাবতাম। মধ্যবিত্ত লোকের অর্থের অভাব, তাদের পরাধীনতার অনুভূতি, দরিদ্রতার লান্‌ছনা, তাদের প্রতি ধনীদের উৎপীড়ন এসবের প্রতিকার কিসে হয় তার চিন্তা এখন বোধহয় তাদের মাঝে এসেছে। হরিজনরা কোনদিন মুখ খুলে তাদের দুঃখের কথা কারো কাছে বলেনি। তারা এখন শুধু দুঃখের কথা বলে না, যাতে তাদের দুঃখ মোচন হয় তার দাবীও বোধহয় করে। যে হরিজন একদিন অপরের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করত এখন তারা আর উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করে না। এখন উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করে তারাই যারা এই অসৎ নিয়মের প্রবর্তন করেছিল। আমি আরও ভাবতাম এখন দেশে আর বোধ হয়