শহরে যে কয় কাপ মদ আমাকে খেতে দেওয়া হয়েছিল তার সবটাই বাহাদুরী করে উদরসাৎ করায় অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। যখন এরূপ অস্বস্তি অনুভব হয় তখন কোন মতেই ঘরের বাইরে যাওয়া অথবা নিজের স্থান পরিত্যাগ করা উচিত নয়। ইউরোপে দেখেছি মাতাল অবস্থায় অনেকেই অনেক কিছু হারিয়ে ফেলে, সেজন্য কেউ দায়ী হয় না, পুলিশও সাহায্য করতে পারে না। তাই কেবিনে যাওয়াই একান্ত কর্তব্য ভেবে কেবিনে প্রবেশ করে নিজের বার্থে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। সাতটার সময় সেদিন ডিনার খাবার বন্দোবস্ত হয়নি। ডিনারের বন্দোবস্ত হয়েছিল রাত বারটায়। নির্দিষ্ট সময়ে যখন ডিনারের ঘণ্টি বাজল তখন শরীর ঠিক হয়ে গিয়েছিল। খাবার সমাপ্ত করে নানারূপ গল্প করার সময় শুনলাম আগামী পরশু বিকালের দিকেই আমরা সাউথ্হাম্টনে পৌঁছব। এই সংবাদ পরের দিন জাহাজী সংবাদপত্রে বার হল। সংবাদ বার হওয়া মাত্র সকল যাত্রীর মুখেই আনন্দের চিহ্ন ফুটে উঠল। সবাই পেট ভরে মদ খেতে লাগল। তারপর বিকালে হল একটা সভা। সভায় জাহাজের ক্যাপ্টেন সভাপতিত্ব করলেন। সকলেই কিছু কিছু বললেন। আমার বন্ধুটি একদম নীরব থাকাই পছন্দ করলেন। সেজন্য আমাকেই দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতবাসীদের পক্ষ হয়ে এবং খাস ভারতবাসীর পক্ষ হয়েও কথা বলতে হয়েছিল। বলার নির্ধারিত সময় ছিল পাঁচ মিনিট, কিন্তু অর্ধঘণ্টা বলার পর উপসংহারে বললাম, “আর সময় ক্ষয় করে লাভ নাই, ভারতের সুখদুঃখের হিসাব ভারতবাসী যদি না করে তবে আর কেউ তার কুলকিনারাও করতে পারবে না, অতএব আমার স্বদেশের এবং স্বদেশবাসী যারা দক্ষিণ আফ্রিকাতে বাস করছেন তাদের দুঃখের কথা বলে এতক্ষণ আপনাদের আনন্দে বাধা দিয়েছি বলে ক্ষমা করবেন।” এই বলেই আমি আমার কথার শেষ করেছিলাম। সভা যখন সমাপ্ত হয়েছিল তখন