দরকার নাই, যে কোনও হোটেলে গেলেই হয়। কিন্তু অনেক দিনের দরিদ্রতার ফলে একটু বেশী রকম মিতব্যয়িতার জ্ঞান অর্জন করেছিলাম এবং সে জ্ঞান সহজে বর্জন করা আমাদের দ্বারা হয়ে উঠছিল না। ঘরের খোঁজে বার হয়েছি সস্তায় থাকব বলে। ইউস্টন্ স্কোয়ার হতে এলগেট্ পর্যন্ত ঘর খুঁজেছি কিন্তু কোথাও ঘর পাইনি। এই পথটার মাঝে অন্তত দুই শত জায়গায় ঝুলছিল ঘর ভাড়ার বিজ্ঞাপন। কিন্তু ঘরগুলি আমার মত কালো আদমির জন্য নয়, সাদা চামড়ার জন্য। এক স্থানে একজন লোক বেরিয়ে এসে অতি নম্রভাবে বললেন, “এই মাত্র সব ঘরই ভাড়া হয়ে গেছে কি করি বলুন তো?” আমি বললাম, “বিজ্ঞাপনটি উঠিয়ে যদি নিতেন তবে আর আমাকে কষ্ট করতে হত না।” ভদ্রলোক তৎক্ষণাৎ ভদ্রতা করে বিজ্ঞাপনটি উঠিয়ে ঘরে নিয়ে রেখে দিয়ে ফের বাইরে এসে আমাকে বললেন, “এমন করে আপনার ঘর খোঁজা অনর্থক হবে। যে সব পাড়ায় ভারতীয় ছাত্ররা অথবা মজুররা থাকে সেখানে যান সুবিধা হবে―আপনার জন্য কেউ ব্যবসার ক্ষতি কারবে না।” ব্যাপারটা বুঝলাম; আমার কালো মুখই ঘর পাবার প্রতিবন্ধক ছিল। বিলাতফেরত সুধীজন কি এসব কথা দেশে এসে কখনও কারো কাছে বলেছেন? তারা এসব কথা বলতে পারেন না কারণ এসব কথা বললে যে তাদেরই বাহাদুরী চলে যাবে।
ইস্ট ইণ্ডিয়া ডকে যাবার ইচ্ছা ছিল না কারণ এখন আমি ধনী আর যেসকল ভারতবাসী সেখানে থাকে তারা দরিদ্র। কিন্তু এ অভিমান আমার বেশীক্ষণ রইল না। চললাম ডকের দিকে সর্বহারাদের কাছে। তাদের কিছু নাই, তাই অভিমান তাদের কাছে ঘেঁষে না। ভরসা এই তারা আমাকে প্রত্যাখ্যান করবে না। ৯০ হাই ষ্ট্রীটে একটি হিন্দুস্থানী এসোসিয়েসন আছে। ভাবলাম, সেখানে গিয়ে মুসলমানদের সংগেই