পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



৩৮
আজকের আমেরিকা

যতক্ষণ নিজেকে ইণ্ডিয়ান বলে পরিচয় না দেয়, ততক্ষণ তাদের সকল ব্যবসাই চলে। যেই তার পরিচয় বের হয় অমনি তার কারবার বন্ধ হয়ে যায়।

 আমার ইচ্ছা হয়েছিল, একদিন মিঃ চেম্বারলেনের বাড়িটা গিয়ে দেখে আসি। ১০নং ডাউনিং স্ট্রীটের কথা বৃটিশ সাম্রাজ্যের যেখানে সেখানে শোনা যায়। কলোনিয়্যাল অফিস, ইণ্ডিয়া অফিস, এ সবই কাছে কাছে অবস্থিত। তাই সামান্য সময় সেদিকে কাটলে মন্দ হবে না ভেবে ডাউনিং স্ট্রীটে গেলাম। তখন বেলা দশটা। লণ্ডনে কোনদিন আমি এত সকালে ঘুম থেকে উঠিনি। আমার নিয়ম ছিল প্রাতে তিনটায় শোয়া এবং বারটায় শয্যা ত্যাগ করা। কিন্তু সেদিন কি জানি কেন ঘুম ভেংগে গেল, তাই এত সকালে সেখানে যেতে পেরেছিলাম। ভেবেছিলাম ১০নং বাড়ির সামনে অনেক সেপাই থাকবে, ইনফরমার, গুপ্ত পুলিস এ সব তো নিশ্চয়ই থাকবে। কিন্তু গিয়ে দেখি সেই গলিটায় একটা লোকও নাই। সেকেলে ধূসর বর্ণের উচু বাড়িগুলি দাঁড়িয়ে আছে আকাশের দিকে চেয়ে। দেখার মত কিছুই নাই, তাই চলে আসলাম।

 বিকালে দশটায় ঘুম থেকে উঠে নেটিভ সাথীটিকে নিয়ে বেড়াতে গেলাম। সর্বপ্রথমই গেলাম একটি চায়ের দোকানে। চা খাওয়া হয়ে গেলে আমরা চললাম টেমস নদীর তীরে। রাত তখন গভীর। পথে লোকজনের চলাচল কম। মাঝে মাঝে দু-একটা মোটরকার একটু বেশী জোরে ছুটে চলেছে। সামনেই টেমস নদী যেন কলকাতার গংগা। নদীর জলে আলো পড়ে বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। নদীর জল নীরবে সাগরের দিকে চলেছে। দেখলাম, আমাদের মত আরও অনেকে নদীর সৌন্দর্য দেখতে এসেছে। তাদের অনেকের শরীর শীর্ণ ও জীর্ণ বস্ত্রে আবৃত। শুধু পুরুষ নয় স্ত্রীলোকও আছেন। সবাই নীরবে চলেছে।