পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজকের আমেরিকা
৪৭

 বিদেশী ব্যবসায়ী মহলেও যাওয়া-আসা করেছি। এদের মধ্যে তুরুক, বুলগার, শ্লাভ, মাঝারু, জার্মান, স্প্যানিস, ইটালিয়নো―অনেকের সংগে কথা বলেছি। প্যালেস্টাইনের ইহুদী এবং আরবদের একই রেস্তরাঁয় বসে খেতে দেখেছি। সকলের মুখে এক কথা,―এমন করে জীবন আর কয়দিন কাটবে। যেন সকলেই কিছু একটা পরিবর্তন চায়। পরিবর্তন কোন্ দিক দিয়ে কি প্রকারে আসে, তাই দেখবার জন্যে যেন সকলেই উৎসুক। মাঝে মাঝে দৈনিক ‘ডেলি ওয়ারকার্‌’ পাঠ করতাম। তার সম্পাদক আমাদের দেশের লোক। সেই সংবাদপত্রে কণ্টিনেণ্টের রাষ্ট্রনৈতিক পদ্ধতি সম্বন্ধে আলোচনা থাকত এবং ভারতের সংগে তার তুলনাও হত। শুনলাম, ভারতীয় ছাত্রেরা এই সংবাদপত্র পাঠ করতে ভয় পায়।

 লণ্ডন পরিত্যাগ করার দিন পুঁটলি পাঁটলা বেঁধে মিঃ দত্ত এবং গ্রীক সাথীটিকে সংগে নিয়ে ওয়াটারলু স্টেশনে গিয়ে হাজির হলাম। প্রত্যেক গাড়িতে যাঁরা যাত্রী তাদের নাম লেখা ছিল। আমারও নাম লেখা ছিল। আমার কম্পার্টমেণ্টে দুজন প্রফেসর এবং একজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন, আমাকে নিয়ে চারজন। আমাদের দেশের তৃতীয় শ্রেণীর গাড়ির কথা মনে হওয়ায় বড়ই দুঃখ হল। কম্পার্টমেণ্টে উঠে মনে হল সংবাদপত্রের কথা তাই সাথীদের সংবাদপত্র কিনে দিতে বললাম। সাথীরা সেদিন সকালের পাঁচখানা সংবাদপত্র কিনে আমার হাতে দিয়ে বিদায় নিলেন। গাড়ি চলল সাউথ্‌হাম্‌টনের দিকে। গাড়ি কোথাও থামল না। আমি একাগ্রভাবে পথের দুদিকের সৌন্দর্য দেখতে লাগলাম। পথের দুদিকের সৌন্দর্য আমাদের দেশের মতই। ফ্রান্‌সের সৌন্দর্য বোধে এবং ব্রিটেনের সৌন্দর্য বোধে অনেক প্রভেদ। ফ্রেন্‌চরা গাছের ডাল কাটে যখন গাছে নতুন পাতা গজায়। এরা শুকনা ডালও ভাংগে