পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
আজকের আমেরিকা

না। আমাদের দেশে অভাবে পড়ে অনেকে আজকাল হয়ত শুকনা ডাল ভাংগে কিন্তু পূর্বে তা করত না। এখানে ফ্রেন্‌চ রুচি এবং ব্রিটিশ রুচিতে অনেক পার্থক্য দেখা যায়।

 গাড়ি সাউথহামটনে গিয়ে দাঁড়াল। আমি ইচ্ছা করেই সকলের শেষে নামলাম। আমি জানতাম কষ্ট আমার পথ আগলে বসে আছে। গাড়ি হতে নেমে জর্জিক জাহাজের দিকে অগ্রসর হলাম। পাশেই দাঁড়ানো নরম্যানডিও আমেরিকায় যাবে। জর্জিকে যারা যাবে, তারা জেঠির পথ ভিড় করে বন্ধ করেছে। আমার তাতে লাভই হল, আমি দাঁড়িয়ে সব দেখতে লাগলাম। চীনা যুবকগণ নিজেদের দেশের সৈনিকের পোষাক পরে জাহাজে উঠছে, তারা চলেছে লড়তে জাপানীর সংগে। তাদের সকলের মুখেই হাসি। অন্যান্য জাতের লোকও বুক উঁচু করে পথে চলছে। শুধু আমারই মুখ ম্লান। আমি বোধহয় এতবড় ডক্‌টাতে একমাত্র ভারতবাসী ছিলাম।

 সকলে পাসপোর্ট দেখিয়ে জাহাজে গিয়ে উঠল আমার বেলা কিন্তু অন্য রকমের ব্যবহার। আমার মুখ দেখেই পাসপোর্ট অফিসারের পিলে চমকে গেল। একজন অফিসার আমাকে অপেক্ষা করতে বললেন। আমি গিয়ে একটা বেন্‌চে বসলাম এবং নানা কথা ভাবতে লাগলাম। ভাবছিলাম আজ হায়দরাবাদের নিজাম যদি আমার মত এখানে এই অবস্থায় পড়তেন, তা হলে তাঁর অবস্থা কেমন হত? অবশ্য জাহাজ আমাকে ফেলে যাবে না তা আমি ভাল করেই জানতাম। অফিসার জিজ্ঞাসা করলেন, “এ টিকিট কে আপনাকে বিক্রি করেছে?”

 “জাহাজ কোম্পানি।”

 “আমেরিকার ভিসা আছে?”

 “আছে।”