পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
আজকের আমেরিকা

আপন কেবিনে ফিরে এলাম। এবার দুপুরে খাবারের পালা। আমি যে টেবিলে বসেছিলাম, তাতে চারজন হাংগেরিয়ান এবং দুইজন হাংগেরীর ইহুদী বসেছিলেন। এরা কেউ ইংলিশ জানেন না। তারা কৃষক, আমেরিকায় বসবাস করতে যচ্ছেন। কৃষকের আদর সর্বত্র। তাই তাদের সামনে নানারূপ খাদ্যসম্ভার সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। সেই গন্ধ আমার কাছে বেশ ভাল লাগছিল। বোধহয় কৃষকেরা খাদ্যসম্ভার উৎপাদন করেই সুখী, খাওয়ার দিকে তাদের তেমন মন নাই। তারা ফলমূল আমারই দিকে ঠেলে দিল। বুঝলাম, কৃষকের মন উদার। অন্যদের মতন কালা আদমীদের উপর তাদের ঘৃণা নাই। শেষের দিকে মনে হল কৃষকেরা যেন খেয়ে তৃপ্ত হয়নি। একটা কথা মনে হল। ওয়েটারকে ডেকে বললাম, “এদের এক গ্লাস করে বিয়ার দিলে ভাল হয়।” “তাই তো; আমারও তাই মনে হয়। তবে বিয়ার দিবার আমার অধিকার নাই।” আমি বললাম, “কথাটা যেন পারসার পর্যন্ত পৌঁছে।”

 তৎক্ষণাৎ পারসার এসে উপস্থিত হলেন। আমাকে জিজ্ঞাস করলেন, আমার কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি? আমি তাঁকে হাংগেরীর কৃষকদের অসুবিধার কথা জানালাম। বললাম তাদের দেশে আমি অনেক দিন ছিলাম; তাই তাদের খাবার পদ্ধতি আমি জানি বলে কথাটা উত্থাপন করছি। তৎক্ষণাৎ এদের জন্য বিয়ার আনা হল। বিয়ার পেয়ে পেট ভরে রুটি আলু মাখন ও সামান্য মাংস চাষারা খেল। কাফে তারা খেল না। এমন কি অন্যান্য সুখাদ্যের দিকে চেয়েও দেখল না। তারা সুখী হয়েছে দেখে আমিও সুখী হলাম, খুব আত্মতৃপ্তি বোধ হল। কিন্তু নিজের দেশ হলে কি করতাম, তা বলতে পারি না। হয়তো চাষা বলে তাড়িয়েই দিতাম। এ দেশের চাষা আর আমাদের