দেশের চাষার প্রভেদ অনেক। ওরা স্বাধীনতা বোঝে, আপনার জাতের সংবাদ রাখে। যে সকল চাষা রাজনীতি বোঝে তারাই হল জাতের মেরুদণ্ড। আমাদের দেশের চাষারা সে রকম নয়, তারা শুধু সেবা করতে জানে, অপরের তাঁবেদারী করতে জানে, ঋণের দায়ে সর্বহারা হতে জানে। আমাদের দেশের চাষারা সংকটে পড়ল ভগবানকে অগতির গতি মনে করে, এদেশের চাষারা সংকটে পড়লে সকট-মুক্তির পথ নিজে খোঁজে।
জাহাজের অভিজ্ঞতা অনেক বলেছি; পুনরুক্তি নিষ্প্রয়োজন। তবে এই জাহাজে একটা নতুন ব্যাপার ঘটেছিল। শুনেছি কর্পূরতলার হিরোজার সেক্রেটারি পারসার হতে আরম্ভ করে সাধারণ নাবিকদের পর্যন্ত নাকি অর্থ বিতরণ করেছিলেন। অনেকে ভেবেছিলেন আমিও হয়ত সেইরকমই অর্থ বিতরণ করব। কিন্তু কেউ বুঝতে পারে নি যে আমি একজন দরিদ্র ভারতবাসী। গুদামে আবদ্ধ আমার দ্বিচক্রযান কারও লক্ষ্যপথে আসেনি। এমন কি পারসার মহাশয় পর্যন্ত সেসব সংবাদ রাখতেন না। তাই বোধ হয় মাঝে মাঝে এসে শোনাতেন, অমুকে তাকে এত দিয়েছিল, অমুকের কাছ থেকে এত পেয়েছিলেন। বলা বাহুল্য, অভিপ্রায় এই যে, যেন আমিও তার কথা বিস্মৃত না হই। নানাভাবে একথা জানাতেও কসুর করেন নি যে, খুচরা পয়সার অভাব হবে না, ব্যাংকের চেক থাকলে তাও তিনি ভাংগিয়ে দিতে পারেন। আমি কোনও মহারাজার সেক্রেটারী হব বলেই ছিল বোধ হয় তার ধারণা। পূর্বোক্ত গ্রীক যাত্রীটি সময় সময় এসে আমার সংগে গল্প করতেন। তারই সামনে একদিন পারসার মহাশয়ের চেক ভাংগানির কথাটা উঠল। তিনি স্পষ্ট ভাষায় পারসার মহাশয়কে জানিয়ে দিলেন যে আমি ভারতের একজন সামান্য লোক, আমার কাছ থেকে লম্বা চেক