পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৪
আজকের আমেরিকা

পাবার আশা বৃথা। লোকটি স্তব্ধ হয়ে গেল! একটা পুরা কেবিনে যার থাকবার বন্দোবস্ত হয়েছে, কাপ্তেন এসে যাকে মাঝে মাঝে দর্শন দিয়ে যাচ্ছেন সেই লোক সামান্য হয় কি করে তা বোধ হয় তিনি ভেবে পাচ্ছিলেন না। আমার সত্যিকার পরিচয় পেয়ে পারসার আর আমার ত্রিসীমানায় আসতেন না, কিন্তু কয়লাওয়ালা, তেলওয়ালা, বয়, কুক ওরা আমার কথা শোনবার জন্য, আমার সংগলাভ করবার জন্য প্রায়ই আমার দরজায় হানা দিত। কিন্তু আমি তাতে বিরক্ত না হয়ে সব সময়েই তাদের মনোবান্‌ছা পূর্ণ করবার চেষ্টা করতাম। হাজার হোক তারা মজুর। আমি পরাধীন দেশের লোক, দরিদ্র, এবং দলিত, তাই মজুর ও দলিতদের সংগে আমার বন্ধুত্ব হতে বেশী সময় লাগে নি। আমরা পরম আনন্দে দশদিন কাটিয়ে একদিন নিউইয়র্কের দরজার কাছে এসে পড়লাম।

 সেই দরজা লোহার। আঘাতেও সেই দরজা সহজে ভাংগে না। সেই দরজা মন্‌রো ডক্‌ট্রিনের (Monro Doctrine) শৃংখলে আবদ্ধ। তার চাবি ইমিগ্রেশন অফিসারের হাতে। তাঁরই ইচ্ছার উপর সেই লৌহ পিন্‌জরে প্রবেশের অধিকার নির্ভর করে। সেই লৌহদ্বার আমার সামনে আর দুদিন পরেই আসবে, দৈনিক জাহাজী সংবাদপত্র আমাকে সে কথা জানিয়ে দিল। এ সংবাদে অনেকেরই মন ভারাক্রান্ত হল। কেউ কেউ দেদার মদ খেতে শুরু করে দিল। আমি এ সব সুখ-দুঃখের বাইরে দাঁড়িয়ে ভাবতে লাগলাম মন্‌রো ডক্‌ট্রিনের কথা। যে আদর্শের অনুরোধেই মন্‌রো ডক্‌ট্রিনের প্রবর্তন হয়ে থাক না কেন, এর দোহাই দিয়ে এই জাতটার আর্থিক স্বার্থ সাধনই আমার চোখে পড়তে লাগল। মনকে বললাম,―মন ভাল করে যদি বুঝতে চাও তো চোখ বেশ করে খুলে রাখ।

 মানুষের মনে উদ্‌বিগ্নতা থাকলে তার চিন্তাধারা কমে যায় তাই সকল