দৃশ্য একটার পর একটা চোখে আসতে লাগল। কিন্তু এসব দৃশ্য আমার মনে তেমন দাগ কাটতে পারছিল না, আমি ভাবছিলাম এদেশে গিয়ে দেখতে হবে আমেরিকার ডিমক্র্যাটিক গবর্ণমেণ্টের স্বরূপ কি। বোধ হয় তখন বিকালের সাড়ে সাতটা, চারিদিক কুয়াশায় অন্ধকার হয়ে আসছিল, দিনের আলো অতি অল্পই ছিল, দূরের বস্তু কমই দেখা যাচ্ছিল। এমন সময় জাহাজ ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টির’ কাছে এসে গেল। অনেকেই দেখল, আমিও দেখলাম, কিন্তু সে মূর্তি কারও মনের উপর তেমন দাগ কেটেছে বলে মনে হল না কারণ সময়ের পরিবর্তন হয়ে গেছে। যেদিন এই মূর্তি গড়া হয়েছিল সেদিন ইমিগ্রেসন বিভাগের অস্তিত্ব ছিল না।
জাহাজ ধীরে ধীরে হাডসন নদীতে গিয়ে প্রবেশ করল। আমি ডেকে বসে নদীর দুই তীরের দৃশ্যাবলী দেখতে লাগলাম। বাস্তবিক সে দৃশ্য উপভোগ্য। বড় বড় বাড়িগুলির উপর মেঘমালা ঝুঁকে পড়েছে। বিজলি বাতির আলো তাতে পড়ে আঁধারে-আলোর সৃষ্টি করেছে। সেই আঁধারে আলো দেখবার মত। আজকের দিনটা যে আমাকে হাজতে বাস করতে হবে, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিন্ত ছিলাম বলেই নামবার জন্য তাড়াহুড়া করছিলাম না। একজন আমেরিকান আমাকে আকাশস্পর্শী বাড়িগুলির পরিচয় দিচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, “ওই দেখুন ওয়ালস্ স্ট্রীট। ওয়ালস্ স্ট্রীটই পৃথিবীর সমুদয় ব্যবসায় এবং আমেরিকার পলিটিক্সের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করছে। বাঁদিকে পড়ল হারলাম, হারলামই হল আমেরিকার প্যারি।” কথা বলতে বলতেই জাহাজ কুলে এসে ভিড়ল। সিঁড়ি পাতা হল, ইমিগ্রেশন অফিসার এলেন, সমস্ত যাত্রীরা ডাক্তারের সামনে যেতে লাগল। যারা আমেরিকা প্রবেশের আদেশ পেল, তারা নিজেদের অনেক ভাগ্যবান মনে করল। শেষটায়