এসে পড়লাম; পথটি দেখবার মতই। ছত্রপতি শিবাজী যেমন দিল্লী প্রবেশের সময় এদিকে সেদিকে বড় তাকান নি, আমিও তেমনি কোনও দিকে না তাকিয়ে একটি ট্যাক্সি ডেকে সাইকেলটা তাতে বোঝাই করে কমলাদেবী মুখোপাধ্যায়কে ভাল করে বসিয়ে ৪২নং স্ট্রীটের ওয়াই. এম. সি. এ-এর দিকে রওনা হলাম। লণ্ডনের জাহাজের এজেণ্টও আমাকে নিতে এসেছিলেন। তিনিই ওয়াই. এম. সি. এ-এর ম্যানেজারের কাছে আমার আগমনী নিবেদন করলেন। ম্যানেজার নীচে এসে আমার মুখ দেখেই বললেন, “বড়ই দুঃখের সংগে জানাতে হচ্ছে, আমাদের এখানে একজন লোক রাখবারও স্থান নাই।” আমি বুঝলাম ব্যাপারখানা কি। তৎক্ষণাৎ কমলাদেবীকে বললাম, আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি এখন আমার থাকার স্থান আমিই খুঁজে বার করব। অতএব যদি অনুমতি দেন ত আপনাকে গিয়ে রেখে আসি।”
আমার অপমানে তিনিও বোধ হয় অপমান বোধ করেছিলেন। তাই অপমানের বোঝা আর বইতে না চেয়ে ট্যাক্সি থেকে নেমে পড়লেন এবং বললেন, যেখানেই থাকি না কেন কাল সকালে যেন তার কাছে ফোন করি।
অপমান লাঘব করবার জন্যই বোধহয় কমলাদেবী বললেন, “আপনার বাইসাইকেল নিয়ে এখানে আসা ভাল হয়নি। অন্য একজন বাংগালী ভূপর্যটক এসেছিলেন, তার সঙ্গে এ বালাই ছিল না।” আমি বললাম, “এই নিয়েই আমি পথ চলি এবং আমেরিকায় এই নিয়েই চলাফেরা করব। যাক এটার জন্য ভাবতে হবে না।”
তিনি চলে যাওয়াতে অনেকটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করলাম। তারপর অন্য একটা ওয়াই. এম. সি. এ.-তে গেলাম, এবং সেখানেও সেই ‘স্থানাভাব’। সাদা চামড়ার ওয়াই. এম. সি. এ-তে স্থানলাভের আশা সুদূরপরাহত বুঝে