পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
আজকের আমেরিকা

দুদিকের দৃশ্যাবলী দেখার জন্য ওয়ালস্‌ স্ট্রীটে আমরা ধীরে ধীরে হেঁটে চলতে লাগলাম। বড় বড় বিল্ডিংগুলি দেখে সেখানে কি হয় না হয় তার কিছুরই সন্ধান পাওয়া যায় না। তাই সাথীদের একটি পাবলিক স্থানে নিয়ে যেতে বললাম। সেয়ার মারকেট কাছেই ছিল, আমরা সেয়ার মারকেটের হলঘরে গিয়ে দাঁড়ালাম। হলঘরে তখন অনেক লোক দাঁড়িয়ে বেচাকেনা করছিল। সেয়ারের দাম ক্রমাগতই নামছিল এবং বাড়ছিল। আমি সেয়ারের দাম উঠা নামার দিকে একটুও তাকাচ্ছিলাম না, শুধু লক্ষ্য করছিলাম লোকের আচার ব্যবহার, কারণ আমেরিকায় যাবার পূর্বে একদিন বোম্বের সেয়ার মারকেটে গিয়ে কতকগুলি পাগল দেখে ভয় হচ্ছিল এদের হাতেই যদি আমাদের ভবিষ্যৎ ছেড়ে দিতে হয় তবে বড়ই বিপদে পড়তে হবে। সুখের বিষয় ওয়ালস্‌ স্ট্রীটের সেয়ার মারকেট সেরূপ নয়। এখানে শৃংখলা বিরাজমান। ক্রেতা এবং বিক্রেতাগণ ধীরে কথা বলছিল। এক দলের কথার শব্দ অন্য দলের কানে পৌঁছচ্ছিল না। এটাকেই বলে ইউরোপীয় সভ্যতা। এখানে একে অন্যের সুযোগ এবং সুবিধার প্রতি লক্ষ্য রেখেই কাজ করে। বম্বেতে সেরূপ কিছুই নাই।

 আমাকে দেখতে পেয়েই কতকগুলি সেয়ার বিক্রেতা কাছে আসল এবং শেয়ারের ফর্দ্দ হাতে দিয়ে শেয়ারের গুণাগুণ বলতে লাগল। তাদের কথায় বাধা দিয়ে বললাম আমি এখানে ব্যবসা করতে আসিনি। ব্যবসায়ীরা কেমন ব্যবসা করছে তাই দেখতে এসেছি, আমি একজন ভারতীয় পর্যটক মাত্র। আমাকে ঠাট্টা করে একজন বলল, “যদি আজ লক্ষ খানেক ডলার রোজগার করতে পারি তবে আমিও আপনার মত পর্যটক হব।” আমি বেশিক্ষণ এদের কাছে না দাঁড়িয়ে সাথীদের নিয়ে হলঘর হতে বেরিয়ে পড়লাম। ওয়ালস্‌ স্ট্রীটে এমন কিছুই ছিল না যা দেখে আমার আনন্দ হতে পারে, তাই সাথীদের নিয়ে ওয়ালস্‌ স্ট্রীট