পাতা:আজকের আমেরিকা.djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
আজকের আমেরিকা

হলাম। খাবার এলে বললেন, “গরু গরুই, দেবতা নয়, শূকরও তাই। খেয়ে হজম করতে পারবে তো ঠাকুর?” আমি নীরবে সবই গলাধঃকরণ করলাম। কথায় কথায় বললেন, “মিঃ প্যাটেল এসেছিলেন। লোকটি ভাল, কিন্তু পুঁজিবাদী। পুঁজিবাদী বুদ্ধি আর স্বভাব, যতদিন সুযোগ ও সুবিধা থাকে ততদিনই বজায় থাকে, সহজে যায় না।”

 আমাকে তিনি তার ঘরে নিয়ে গেলেন না, নিয়ে গেলেন ‘ইন্‌টার ন্যাশনাল’ নামীয় একটি হোটেল। যত রাজ্যের কমিউনিস্ট এই হোটেলটাতে বাস করে। কয়েকজন লোকের সংগে পরিচয় করিয়ে দিয়েই তিনি হল ঘরের এক পাশে দাঁড়িয়ে বলতে লাগলেন, “কমরেডগণ, এই লোকটা আমার দেশ থেকে দুদিন পূর্বে এসেছে, একদম তাজা। এর সংগে কথা বলে বুঝতে পারবে ভারতে আমাদের কি অবস্থা। যদি পার তো কয়েক দিনের মধ্যে এটাকে মানুষ তৈরি করে ফেল।” পংগপালের মত অনেক লোক নীচে নেমে এল, তাদের মধ্যে ছিলেন দুজন ভারতীয় ছাত্র। কার্পূরতলার মহারাজা আমেরিকায় এসেছেন, তাঁরই কথা অনেকক্ষণ ধরে চলল। তারপর আমাকে জিগ্‌গাসা করা হল আমি তাঁরই দলের একজন কি না। মোল্লা মশায় লাফিয়ে উঠে বললেন, “না হে, লোকটা পেটি বুরজোয়া, আমাদের বাড়ির কাছেই বাড়ি। আমার জন্ম হয়েছে কৃষকদের মাঝে, আর ওর জন্ম হয়েছে প্রকৃত পরশ্রমজীবিদের মাঝে। আমাদের রক্ত খেয়ে ওরা বাঁচে, তাই দেখাতে এনেছি এদের আকৃতি প্রকৃতি দেখতে কেমন, এদেশে যেমন এরূপ জীবের অভাব নাই, আমাদের দেশেও তেমনি সেরূপ জীবের অভাব নাই।”

 কমিউনিজমের প্রতি আস্থা থাকলেও এরূপ ক্ষেত্রে মন বিরূপ হয়ে দাঁড়ায়। এদের কথা শুনে আমার মনের পরিবর্তন হয়েছিল, কিছুই ভাল