পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

এরোপ্লেন ও আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র ইহার তুলনায় কিছুই নয়! জাপানীরা খুব কম সৈন্য ও এরোপ্লেনের সাহায্যে সমগ্র পূর্ব্ব এশিয়া দখল করিয়াছিল। ইহা সম্ভব হইয়াছিল শুধু এইজন্য যে তখন ইংরেজদের এই অংশে কিছুই ছিল না। কিন্তু বর্ত্তমানে অবস্থা পৃথক আকার ধারণ করিয়াছে। তখন ভারতবর্ষও প্রায় অরক্ষিত ছিল—বাঙলা ও আসাম হইতে ইংরেজরা সরিয়া পড়িবার ব্যবস্থা করিয়াছিল; যুদ্ধেরও প্রয়োজন হইত না। আজ এক শক্তিশালী যান্ত্রিক বাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে প্রস্তুত রহিয়াছে।

 নেতাজী বলিলেন—‘যন্ত্র অপেক্ষা মানুষই বেশী শক্তিশালী। আরাকান, চিন্ ও নাগা পাহাড় অঞ্চলে যান্ত্রিক বাহিনী বিশেষ কাজে লাগিবে না। বৃটিশ সৈন্যের মনোবল নষ্ট হইয়াছে। একবার আসাম ও বাঙলার মধ্যে প্রবেশ করিতে পারিলে দেশের লোক আমাদের সাহায্য করিবে। এখনো আমাদের যথেষ্ট সুযোগ রহিয়াছে।’

 এই সময় গত বৎসরের যুদ্ধে যে সকল সৈন্য দল ছাড়িয়া বিপক্ষে যোগদান করিয়াছিল তাহাদের কথা উঠিল।

 নেতাজী বলিলেন—‘আমাদের ফৌজ স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। আমরা সকলে দেশকে মুক্ত করিবার জন্য স্বেচ্ছায় চলিয়াছি আত্মদান করিবার জন্য—অর্থ বা পুরস্কারের প্রলোভনে নয়। আমাদের মধ্যে যদি কেহ এই দুঃখকষ্ট, দারিদ্র্য ও মৃত্যুর সম্ভাবনায় ভয় পায়, তাহাকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধে পাঠানো না হয়।’

৮ই জানুয়ারি ১৯৪৫: মিংগালাদন্:

 আজ সকালে প্যারেডে নেতাজী উপস্থিত ছিলেন। রণাঙ্গনে যাত্রার পূর্বে তাঁহার বাণী দিলেন:—