পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

সকলেই যথাসর্ব্বস্ব ফেলিয়া পলাইতেছে, সেখানে আমার পাওনা টাকা আদায়ের সম্ভাবনা কোথায়? তবু চেষ্টা করিতেছি। পথেও তো খরচ আছে। ষ্টীমার ও এরোপ্লেনে জায়গা পাইবার আশা নাই। শেষে হয়তো হাঁটা পথেই যাইতে হইবে।

১৬ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪২:

 দুর্ভেদ্য সিঙ্গাপুরেরও পতন হইয়াছে। রেঙ্গুন হইতে বেশীভাগ লোকই পলায়ন করিয়াছে। যে ২।১ জন চলিতেছে, তাহাদের মুখে উৎকণ্ঠার ভাব। পথে আয়ারকে একটি ল্যাঞ্চার (রিক্সার) উপর দেখিলাম। ছোট একটি মোট লইয়া চলিয়াছে। আমায় জিজ্ঞাসা করিল—‘আপনি এখনো আছেন?’ তারপর এদিক-ওদিক চাহিয়া চাপা গলায় বলিল—‘জাপানীরা আসিয়া পড়িল যে।’

 সত্যই কি জাপানীরা আসিতেছে? প্রকৃত সংবাদ কোথায় গেলে পাই? মনে পড়িল, রাও পোষ্টমাষ্টার জেনারেলের অফিসে কাজ করে; সে হয়তো বলিতে পারে। চলিলাম স্ট্রাগু রোডে পি-এম-জির অফিসে। কিন্তু অফিস প্রায় জনশূন্য।

 এখান হইতে চলিলাম ‘সান্’ পত্রিকা অফিসে। তাহার নিশ্চয়ই সংবাদ রাখে। চারদিন কোন সংবাদপত্র বিক্রয় করিতে দেখি নাই। সান্ বর্মীদের সর্বাপেক্ষা প্রতিপত্তিশালী দৈনিকপত্র। অফিসে গিয়া দেখিলাম তালা বন্ধ।

 পথে ল্যাঞ্চার (রিক্সা) একটিও নাই। দু’একখানি গাড়ী কদাচিৎ চলিতেছে।

 এক কাপ চা হইলে ভালো হইত। কিন্তু একটি দোকানও দেখিলাম না।