পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 ম্লানমুখে নিঃশব্দে আমরা দুজনে বাহির হইয়া আসিলাম। হঠাৎ সাইরেন বাজিয়া উঠিল আহত কুকুরের করুণ আর্ত্তনাদের মতো। আকাশে জাপানী এরোপ্লেনের শব্দ—ভম্ ভম্-ভম্। রাস্তার পাশেই একটা বাড়ীতে আশ্রয় লইলাম। সৌভাগ্যক্রমে বোমা পড়িল না। জাপানী এরোপ্লেনগুলি শহরের উপর উড়িয়া উড়িয়া আবার দূরে মিলাইয়া গেল।

 নাথুভাই এতক্ষণ পরে কথা বলিলেন—‘সাহেবরাও পলায়ন করিতেছে। পূর্ব্বে সুবিধা ছিল যাইবার; কিন্তু বাড়ী-ঘর ধন-সম্পত্তি যথাসর্ব্বস্ব আমার এখানে। কি করিয়া ফেলিয়া যাই। তাই যাওয়া হয় নাই। এমন হইবে কে জানিত!’

 এই অবস্থায় রেঙ্গুনে আর থাকা চলে না। দোকানপাট বন্ধ খাবার জিনিষ পাওয়া যায় না। এখানে থাকিলে না খাইয়া মরিতে হইবে। তাহার পর অরাজকতা, লুণ্ঠন ও হত্যাকাণ্ডের ভয়তো আছেই।

 আমি বলিলাম—‘আপনি যদি যান, আমায় সঙ্গে লইবেন।’

 নাথুভাই উত্তর দিলেন—‘আজই মুল্যবান জিনিষ মাটির নীচে পুঁতিয়া ফেলিব; যদি কোনদিন ফিরিয়া আসি তা’হলে হয়তো সেগুলি পাইব। কাল সকালে আমি যাত্রা করিব। আপনাকে তুলিয়া লইয়া যাইব।’

 নাথুভাইয়ের নিকট হইতে বিদায় লইয়া ভাবিলাম, এক শিশি এস্পিরিন্ কিনিয়া রাখি—কয়দিন যাবৎ মাথা ধরিতেছে। দে ব্রাদার্সের ডাক্তারখানা নিকটেই। সেখানে এস্পিরিন্ পাওয়া গেল। দে ব্রাদার্সের প্রায় সকলেই চলিয়া গিয়াছেন। গভর্ণমেণ্টের আদেশ যে ডাক্তারখানা খুলিয়া