রাখিতেই হইবে, তাই দোকান এখনো কোন রকমে খোলা রাখা হইয়াছে।
নাথুভাই তো বলিলেন, কাল সকালে নিজে আসিয়া লইয়া যাইবেন। কিন্তু যদি না লইয়া যান্, তাহা হইলে মুস্কিলে পড়িব। আর কাহার মোটর আছে? ডাক্তার কুণ্ডু, লোক ভালো। রেঙ্গুনের নামজাদা ডাক্তার। তাঁহার সহিত পরিচয় সামান্যই। তবু চলিলাম তাঁহার বাড়ীতে।
ডাক্তার কুণ্ডু তাঁহার বাড়ীর দরজায়ই ছিলেন। তিনি তাঁহার চাকরদের উপর গরুর ভার দিয়া যাত্রার ব্যবস্থা করিতেছিলেন। চাকরদের বলিলেন, নিকটবর্ত্তী গ্রামে আশ্রয় লইতে। বুঝিলাম—তাঁহার গাড়ীতে স্থানাভাব; সুতরাং নাথুভাই ছাড়া গতি নাই।
২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৪২:
ভোরবেলা এক সুটকেস্ হাতে চাঁদ সিং আসিয়াছেন বেসিন্ হইতে। তিনি বেসিনের কারেন্ স্কুলে কাজ করিতেন। আমায় বলিলেন—অনেক কষ্টে জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তারের সঙ্গে রেঙ্গুনে আসিয়াছেন। বেসিনে জাপানীরা একদিন খুব বোমা ফেলে। বেসিন নদীর ধারে অনেক বাড়ী ঘর পুড়িয়া গিয়াছে। তাঁহার বাসায়ও বোমা পড়ে; তিনি খুব অল্পের জন্য বাঁচিয়া যান।
ষ্টীমারে ইরাবতী নদী দিয়া মান্দালয় যাইবার চেষ্টা করেন, কিন্তু ইরাবতী ফ্লোটিলা কোম্পানির ষ্টীমারে বা রেলে জায়গা পাওয়া যায় নাই।
আমি তাঁহাকে বলিলাম—‘আমি আজই রেঙ্গুন ছাড়িয়া যাইতেছি এক পরিচিত ভদ্রলোকের সঙ্গে।’