পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 এই সময় নাথুভাই আসিয়া উপস্থিত। ভদ্রলোকের কথার ঠিক আছে। তাহার মোটরে চাঁদ সিংএরও স্থান হইল। তিন জনে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অনিশ্চিতের উদ্দেশে যাত্রা করিলাম।

 সুন্দর ছবির মত শহর—সোজা সোজা রাস্তা—আজ সমস্তই যেন প্রাণহীন। নীল আকাশের গায়ে সোনালি ফায়ার চূড়া নবোদিত সূর্য্যকিরণে তেমনি ঝক্ ঝক্ করিতেছিল।

 পথে লোক চলিয়াছে, কিন্তু সবই অস্বাভাবিক। দলে দলে চলিয়াছে সর্বহারার দল। ইহাদের মধ্যে অনেকে বর্মায় আসিয়া বড়লোক হইয়াছিল: আজ আবার অদৃষ্টের ফেরে সমস্ত ফেলিয়া চলিয়াছে রিক্ত হস্তে। কেহ চলিয়াছে মোটরে, কেহ পায়ে হাঁটিয়া—কাহারও হাতে সুটকেশ, কাহারও পুঁটলি, কাহারও বা মাথায় বোঁচকা; তাহাতে তাহাদের যথাসর্বস্ব। তাহাদের মধ্যে বাঙ্গালী ও মাদ্রাজীই বেশী—শিখও কিছু ছিল। মাদ্রাজীদের মধ্যে অনেক কুরঙ্গি রহিয়াছে—গায়ের রঙ ঘোর কালো, মাথায় ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল ঝুঁটীর মতন বাঁধা; ইহারা এখানে কুলির কাজ করিত।

 বর্মী পরিবারও চলিয়াছে অনেক। পরিধানে রঙিন লুঙ্গি ও গায়ে ছোট জামা—মেয়েদের চুলের গোছা চূড়ার মতো করিয়া বাঁধা।

 মোটর ছুটিয়াছে। রেঙ্গুণ শহর ছাড়িয়া চলিয়াছি। থারাওয়ার্দির কাছে আসিয়া মোটর বিগড়াইল। মেরামত করিতে সন্ধ্যা হইয়া গেল।

 রাত্রে একটা আস্তানা দরকার। দুরে একটা প্যাগোডা দেখা যাইতেছে—ওখানে আশ্রয় মিলিতে পারে। সেইদিকে তিন জনে চলিলাম।

 প্যাগোডার দরজায় বর্মী ফুলওয়ালী ফুল ও মোমবাতি বিক্রয়