পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

আবিল করিয়া নদীর জলে তরঙ্গ তুলিয়া গেল। মিলিটারী যাইতেছে। সাম্পান একখানি আছে; কিন্তু যাত্রীর সংখ্যা এত এবং তাহার খাঁই এত বেশী যে পারের আশা ছাড়িয়া দিলাম।

 একটী সাম্পানে নথুভাইয়ের স্থান হইল অনেক টাকার বিনিময়ে। নাথুভাই বলিলেন—‘আমি চলিলাম। আমার মোটর আপনারা নিন— দেখুন যদি অন্য কোথাও হইতে যাইবার সুবিধা হয়।’

 এখন এ অবস্থায় কি করা যায়? দু’জনে পরামর্শের পর ঠিক করিলাম—রেঙ্গুনেই ফিরিয়া যাই; তবু জানা জায়গা। শহরে না পাওয়া গেলেও কাছাকাছি কোন গ্রামে আশ্রয় লওয়া যাইবে। দেশে প্রত্যাগমনের যখন কোন আশাই নাই, তখন অগত্যা এই পরামর্শ ই অনুসরণ করিলাম। মোটর আবার রেঙ্গুনের পথে ফিরিল। মোটর চালনা জানা ছিল; বিদ্যাটা কাজে লাগিল।

 কয়েক ঘণ্টা চলিবার পর মোটর বিগ্‌ড়াইল। সর্বনাশ, পেট্রল আর নাই— পাইবার সম্ভাবনাও নাই। কি করিব মোটর ফেলিয়া পায়ে হাঁটিয়া শেষে চলিতে হইল।

২৭শে ফেব্রুয়ারী ১৯৪২: পথে:

 সন্ধ্যা ৭টা। পথ দিয়া দুজনে হাঁটিতেছি। রাস্তার অনতিদুরে মিলিটারী ছাউনি—মাঠের উপর কতকগুলি শাদা পাখীর মত দেখাইতেছে। আশ্রয় খুঁজিতেছি। এমন সময় সাইরেন্ বাজিল চারিদিকের নিবিড় নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া আহত কুকুরের কাতর আর্ত্তনাদের মতো। সঙ্গে সঙ্গে জাপানী এরোপ্লেনের গুঞ্জন বাতাসে ভাসিয়া আসিল।