পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৪৫

নারিকেল তৈলও পাওয়া যাইতেছে না। রান্নার জন্য রেড্ পাম অয়েল ব্যবহৃত হইতেছে। ইহাতে নাকি ভিটামিন্ এ আছে প্রচুর।

 চাউল বা ময়দা কিছু যোগাড় করিতে হইবে।

২৪শে জুন ১৯৪৩:

 আজ রেডিও শুনিলাম। টোকিও হইতে সুভাষচন্দ্র বসু বক্তৃতা করিলেন। তিনি বলিলেন—

 ‘আমি আমার বন্ধুগণকে আমার উপর বিশ্বাস রাখিতে অনুরোধ করিতেছি। যে ব্রিটিশ গভর্ণমেণ্ট সারা জীবন আমাকে অভিযুক্ত করিয়াছে এবং এগারো বার কারাগারে নিক্ষেপ করিয়াছে, তাহারাও আমাকে বশীভূত করিতে পারে নাই। ধূর্ত্ত ও শক্তিমান ব্রিটিশই যখন আমাকে বশ করিতে বা দমাইতে পারে নাই, তখন পৃথিবীর অন্য কোন শক্তিও তাহা পারিবে না।

 ‘আমি জার্মাণী বা জাপানকে সমর্থন করিয়া কিছুই বলতে চাহি না। তাহাদের পক্ষ সমর্থন করিয়া কিছু বলা আমার কাজ নয়। ব্রিটেনের ভাড়াটিয়া প্রচারকেরা আমাকে শক্রর চর বলিয়া অভিহিত করিতেছে। আমার সমগ্র জীবনই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে নিরবচ্ছিন্ন ও আপোষবিহীন সংগ্রামের সুদীর্ঘ ইতিহাস। চিরজীবন আমি ভারতের সেবক। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হইবার সৌভাগ্য আমার দুইবার হইয়াছে। আমার মৃত্যুর শেষ মুহূর্ত্ত পর্য্যন্ত আমি ভারতবর্ষেরই সেবক থাকিব। পৃথিবীর যে অংশেই আমি বাস করি না কেন, একমাত্র ভারতবর্ষের প্রতিই আমার আনুগত্য ও অনুরাগ এবং চিরদিনই থাকিবে।’