পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৫৫

সাহায্য করা। প্রকৃতপক্ষে বাহিরের সাহায্য ব্যতীত কাহারও পক্ষেই ভারতকে স্বাধীন করা সম্ভব নয়। কিন্তু দেশের আভ্যন্তরীন স্বাধীনতা সংগ্রামের যে বহিঃসাহায্য অবিলম্বে প্রয়োজন, তাহার পরিমাণ প্রকৃতপক্ষে একান্ত অল্প। ইহার কারণ এই যে চক্র-শক্তির আঘাতে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের দৃঢ় আসন টলায়মান হইয়া পড়িয়াছে। ফলে আমাদের উদ্দেশ্য পূর্ব্বাপেক্ষা অনেক সহজেই সাফল্য মণ্ডিত হইবে।

 আমাদের দেশবাসীর দুই প্রকার সাহায্যের প্রযোজন—নৈতিক ও কায়িক। প্রথমত—তাহাদের অন্তরে এই দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাইয়া দিতে হইবে যে, একদিন তাহারা স্বাধীনতা সংগ্রামে জয়লাভ করিবেই। দ্বিতীয়ত ভারতের বাহির হইতে তাহাদের সামরিক সাহায্য প্রদান করিতে হইবে। প্রথম উদ্দেশ্য সাধন করিতে হইলে আন্তর্জাতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধের ফল কি তাহা বিচার করিতে হইবে। দ্বিতীয় আদর্শ কার্য্যে পরিণত করিতে হইলে প্রথমেই দেখিতে হইবে প্রবাসী ভারতীয়গণ মাতৃভূমিকে কি সাহায্য করিতে পারে এবং যদি প্রয়োজন হয় দেখিতে হইবে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের শত্রুদের নিকট হইতে কোন সাহায্য লাভ করা সম্ভব কিনা। বন্ধুগণ! আমি এখন বলিতে পারি, আমাদের এই দুটি উদ্দেশ্যই সাধিত হইয়াছে। সুদূরবর্ত্তী মহাদেশ পরিভ্রমণ করিয়া আমি আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি অনুধাবন করিতে সক্ষম হইয়াছি এবং বিভিন্ন সমররত শক্তিগুলির অবস্থা উপলদ্ধি করিতে পারিয়াছি। ইহার দ্বারা আমি যখন এই সিদ্ধান্তে পৌঁছিলাম যে ইঙ্গ আমেরিকান সামাজ্যবাদের পরাজয় নিশ্চিত, তখন আমি সে সংবাদ আমার মাতৃভূমিকে প্রেরণ করিয়াছি। অতঃপর আমি দেখিয়া আনন্দিত হইলাম যে, পৃথিবীর সর্ব্বত্র ভারতীয়গণের মধ্যে এক তীব্র জাগরণের