পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৫৭

 শত্রুমিত্র নির্ব্বিশেষে আজ সমগ্র পৃথিবীর সম্মুখে আমাদের এই স্বাধীনতা সংগ্রাম ঘোষনা করিবার দিন আসিয়াছে। প্রবাসী ভারতীয়গণ বিশেষ করিয়া পূর্ব্ব এশিয়াবাসী ভারতীয়গণ, একটি সংগ্রামশীল বাহিনী গঠন করিতে যাইতেছে। এই বাহিনী ভারতস্থিত বৃটিশ বাহিনীকে আক্রমণ করিবার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী হইবে। আমরা যখন আক্রমণ করিব, তখন ভারতের অভ্যন্তরেও বিপ্লব শুরু হইবে। এই আন্দোলন কেবলমাত্র বেসামরিক জনসাধারণই করিবে না, বৃটিশ ভারতীয় বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত সৈনিকগণও বিদ্রোহ করিবে। বৃটিশ গভর্ণমেণ্ট যখন অভ্যন্তর ও বহির্দ্দেশ উভয় দিক হইতে আক্রান্ত হইবে, তখন ইহা অচল হইয়া পড়িবে এবং ভারতীয় জনগণ সেই সময়ে পুনরায় তাহাদের স্বাধীনতা অর্জ্জন করিবে।

 সুতরাং আমি যে পরিকল্পনা করিয়াছি তাহার সম্বন্ধে জার্ম্মানী, ইটালী বা জাপান কিরূপ মনোভাব পোষণ করে—সে বিষয়ে আমাদের বিশেষ চিন্তা করিবার প্রয়োজন নাই। যদি কেবলমাত্র বিদেশস্থিত ও স্বদেশস্থিত ভারতীয়গণ তাহাদের কর্ত্তব্য করিয়া যায়, আমি বলিতেছি, তাহা হইলে ভারতে বৃটিশ প্রভুত্বের অবসান নিশ্চয়ই হইবে।

 সুবিধাবাদীরা বলিতে পারে যে, যদি ৩৮ কোটি ৮০ লক্ষ ভারতবাসী বৃটিশ শক্তিকে বহিষ্কৃত করিতে না পারে, তাহা হইলে কেবলমাত্র ৩০ লক্ষ প্রবাসী ভারতীয়ের দ্বারা ইহা কিরূপে সম্ভব হইবে? বন্ধুগণ, আয়ারল্যাণ্ডের ইতিহাসের প্রতি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিতেছি। বৃটিশের অধীনস্থ ৩০ লক্ষ আয়ারবাসী সামরিক আইনের আওতায় থাকিয়াও কেবলমাত্র পাঁচ হাজার সশস্ত্র সিন্‌ফিন্ স্বেচ্ছাসেবকের সাহায্যে ১৯২১ সালে বৃটিশ প্রভুত্বের কবল হইতে মুক্তি লাভ করিতে সক্ষম