পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৭৩

 তাহার চটুল হাসি ও গল্পের মধ্য দিয়া কখন যে পরিচয় ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হইয়াছে বুঝিতে পারি নাই।

 জানকী দেবীর স্বামী গত বৎসর মারা গিয়াছেন। তিনি একটি অফিসে কাজ করিতেন; এখন ঝাঁসীর রাণী বাহিনীতে যোগ দিয়াছেন।

 জানকী দেবীর কাছে তাঁহাদের নারী বাহিনীর গল্প শুনিলাম। লক্ষ্মী স্বামীনাথন্ নামে এক মাদ্রাজী মহিলা ডাক্তার ইহার অধিনায়িকা হইয়াছেন। ইনি মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজের পাশ করা ডাক্তার; মাত্র তিন বৎসর পূর্ব্বে (১৯৪০) সিঙ্গাপুরে আসিয়া চিকিৎসা ব্যবসায় আরম্ভ করেন। নারী বাহিনী গঠনের ভার নেতাজী তাঁহার উপরে দিয়াছেন।

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—‘আপনাদের কি যুদ্ধকৌশল শিক্ষা দেওয়া হইবে?’

 ‘হাঁ, আমরা যুদ্ধ করিতেও শিখিব।’

 ‘আপনারা তাহা হইলে যুদ্ধ করিবেন।’

 ‘আহত সৈন্যদের সেবাই হইবে আমাদের প্রধান কাজ এবং আমরা নার্সিং শিখিতেছি। তবে প্রয়োজন হইলে আমরাও বন্দুক লইয়া আপনাদের পাশে দাঁড়াইতে পারিব।’

 ব্যানার্জ্জি বলিলেন—‘ভারতীয় মেয়েদের মধ্যে বেশী লোক পাওয়া যাইবে বলিয়া আমার মনে হয় না।’

 ‘আপনার ধারণা ভুল। ইহার মধ্যেই আমাদের সংখ্যা দেড় শত হইয়াছে। আপনাদের বাঙালী মেয়েও আছে ইহার মধ্যে। বেলা দত্ত, মিস্ ভট্টাচার্য্য, মায়া গাঙ্গুলী, রেবা সেন, সিপ্রা সেন এবং আরও কয়েকজন যাহাদের নাম আমি জানি না।’

 আমি জিজ্ঞাসা করিলাম—‘আপনারা কোথায় শেখেন?’