পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৪
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 ‘আমাদের জন্য সিঙ্গাপুরে একটি মেয়েদের সামরিক বিদ্যালয় হইয়াছে; সেইখানে আমরা শিখি। ২২শে উদ্বোধন হয়। নেতাজী বক্তৃতা দিয়াছিলেন। তাঁহার বক্তৃতা কি আপনারা খবরের কাগজে দেখেন নাই?’

 ‘আমি বলিলাম—‘নিয়মিতভাবে খবরের কাগজ পাই না।’

 জানকী দেবীর পকেটে সেই অংশটুকু পত্রিকা হইতে কাটা ছিল। আমি তাহা চাহিয়া লইলাম। নেতাজী বলিয়াছিলেন:

 ‘ঝাঁসীর রাণী বাহিনীর শিক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন একটি বিশেষ উল্লেখ যোগ্য ঘটনা—পূর্ব্ব এশিয়ায় আমাদের সংগ্রামের অগ্রগতির পথে একটি স্মরণীয় কাহিনী। ইহার সুদূর প্রসারী সম্ভাবনা উপলব্ধি করিতে হইলে, আমাদের অন্তরের সজল অনুভূতি দিয়া মনে রাখিতে হইবে যে আমাদের এই আন্দোলন শুধু রাজনীতিক আন্দোলন নয়। আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে নুতন করিয়া নব আদর্শে গড়িয়া তুলিবার মহান্ কার্য্যে ব্রতী হইয়াছি। ভারতের জন্য আমরা এক নবযুগ আনিব; আমাদের নব জীবনের ভিত্তি সুদৃঢ় করিব। আপনার মনে রাখিবেন—ইহা মাত্র ফাঁকা কথা নয়। আমরা দেখিতে পাইতেছি, ভারতের পুনর্জীবন আসন্ন। ভারতীয় নারীদের মধ্যেও এই নব জাগরণের শিহরণ উঠা স্বাভাবিক।

 আজ যে শিক্ষাকেন্দ্রের উদ্বোধন করা হইল, তাহাতে আমাদের ১৫৬ জন ভগ্নী শিক্ষালাভ করিবেন। আমি মনে প্রাণে আশা করি, সিঙ্গাপুরে শীঘ্রই তাঁহাদের সংখ্যা এক হাজার হইবে। থাইল্যাণ্ডে এবং ব্রহ্মদেশেও নারী শিক্ষাকেন্দ্র স্থাপিত হইয়াছে। কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় হইল সিঙ্গাপুরে।

 আমার একান্ত বিশ্বাস, এক হাজার ‘ঝাঁসীর রাণী’ এই কেন্দ্র হইতে উঠিবেন।’