পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী
৭৯

 আমি তাড়াতাড়ি উঠিয়া বলিলাম-‘নমস্তে’।

 ‘একলাটি বসিয়া রেডিও শুনিতেছেন। আসুন, একটু বেড়াইয়া আসি।’

 ব্ল্যাক্ আউটের অন্ধকার রাস্তায়। ভূতের বাড়ীর মত সারি সারি বাড়ীগুলি অন্ধকারের মধ্যে মাথা তুলিয়া দাঁড়াইয়া আছে। মাঝে মাঝে এক একটা আলোক চোখে ঠুলি পরিয়া ঝিমাইতেছে। দুইজনে চলিতেছি গল্প করিতে করিতে।

 হঠাৎ জানকী দেবীর পায়ে কিসের জন্য হোঁচট্ লাগিল। আমি ধরিয়া ফেলিলাম।

 জানকী দেবী বলিলেন—‘আর একটু হইলে পা পিছলাইয়া পড়িয়া যাইতাম। যেরূপ অন্ধকার—একা চলা কঠিন।’

 আমার হাতের মধ্যে জানকী দেবীর বাহু ছিল। সেইভাবেই চলিলাম। জানকী দেবীর দিক হইতেও সরাইয়া লইবার কোন চেষ্টা হইল না।

 পার্কে গিয়া দুজনে বসিলাম। কতক্ষণ গল্প করিয়াছি জানি না। অন্ধকার গাঢ়তর হইয়া উঠিয়াছে। আকাশের অগণিত তারা আসিয়া নামিয়াছে দূরে সমুদ্রের বুকে স্নান করিবার জন্য। নক্ষত্রমালার মধ্যমণি চাঁদের মতোই জানকীর মুখখানি। তাহার গায়ের নিবিড় স্পর্শ রক্তের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করিয়াছে।