পাতা:আজাদী সৈনিকের ডায়েরী - মুলকর.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
আজাদী সৈনিকের ডায়েরী

 ‘দিল্পীর পথই স্বাধীনতার পথ। চলো দিল্লী!’

 চোখের সামনে ভাসিয়া উঠিল, আমাদের মহীয়সী মাতৃভূমি—আরাকান্ য়োমা পর্বতশ্রেণী—চিন্দুইন নদী ছাড়াইয়া—নিবিড় অরণ্যের পরপারে। মনে হইল—এবার এই নির্ব্বাসিত জীবন শেষ হইবে— দেশে ফিরিব। বাড়ীর প্রতি একমাত্র আকর্ষণ—বৃদ্ধা মা। তিনি কি বাঁচিয়া আছেন?—নাই, একথা মন বলিতে চাহে না। দেশের জন্য আকুল আগ্রহ মনে জাগিয়াছে।

১১ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪: মেইমিয়ো:

 আজ মেইমিয়োতে জরুরি কাগজপত্র লইয়া আসিয়াছি। মেইমিয়ো জাপানী বাহনীর একটি প্রধান ঘাঁটি। বার্মায় দুটি বড় ঘাঁটি—একটি রেঙ্গুনে, আর একটি মেইমিয়োতে।

 মেইমিও মান্দালয় লাসিও রেলওয়ে লাইনে একটি ষ্টেশন—রেঙ্গুন হইতে ৪২২ মাইল দূরে। শহরটি পাহাড়ের উপর—প্রায় ৩৫০০ ফিট উচ্চে। এককালে এখানে বার্মার লাট সাহেবের গ্রীষ্মাবাস ছিল। পুরাতন গভর্ণমেণ্টের বাড়ীগুলি এখন জাপানী সেনাবিভাগের ব্যবহারে আসিয়াছে। বৃটিশ আমলেও এখানে মিলিটারির বড় আস্তানা ছিল।

 সেণ্ট্ জোসেফ স্কুলের বাড়ীতে আমার থাকিবার স্থান হইয়াছিল।

 এখানে কর্ম ব্যস্ততার চিহ্ন খুব বেশী দেখা গেল। সম্ভবত ভারত আক্রমণের আয়োজন চলিতেছে।

 আমাদের উপর নির্দেশ ছিল উত্তর বার্মার জেনারেল অফিসার কম্যাণ্ডিং মোতাগুচির হাতে কাগজগুলি দিবার জন্য; কিন্তু তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ হইল না। তাঁহার সহকারী কাগজগুলি গ্রহণ করিলেন।