পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১২৩

করিয়াছিলাম। আমার দেশবাসীর মর্ম্মন্তুদ বেদনা আমার চক্ষুর সম্মুখে ভাসিয়া উঠিয়াছিল। বৃটিশ শাসন আমাদিগকে আত্মরক্ষায় সমর্থন করিয়া তোলে নাই বরং আমাদিগকে অনেক দিন যাবৎ দাসত্বের নিগড়ে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে চেষ্টা করিতেছে।

লেঃ ধীলনের বিবৃতি

 লেঃ ধীলন তাঁহার বিবৃত প্রসঙ্গে বলেন, সামরিক কলেজে তিনি যে আদর্শের শিক্ষালাভ করিয়াছিলেন আজাদ হিন্দ ফৌজে যোগদান করিয়া তিনি তাহারই মর্য্যাদা রক্ষা করিয়াছেন। অতঃপর লেঃ ধীলন সুভাষচন্দ্রের বক্তৃতার কথা উল্লেখ করেন। সুভাষচন্দ্রের বক্তৃতায় তাহারা বুঝিতে পারিয়াছিলেন যে জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বেচ্ছাসৈনিক হিসাবেই তাহারা আজাদ হিন্দ বাহিনীতে যোগদান করিয়াছিলেন। লেঃ ধীলন অতঃপর সরকার পক্ষের সাক্ষীদের সাক্ষ্যের অসারতার কথা বর্ণনা করেন।

 সৈন্যদের মনোবলের কথা উল্লেখ করিয়া লেঃ ধীলন বলেন, যদিও বহু সপ্তাহ ধরিয়া তিনি শত্রু সৈন্যের মাত্র দুই মাইল দূরে অবস্থান করিয়াছেন, তথাপি তাহার কোন সৈন্য কখনও শত্রু শিবিরে যায় নাই বা তাহার অবস্থা সম্পর্কে কোন সংবাদ দেয় নাই।

 বহু সময় আমার এমন অবস্থা গিয়াছে যে বিশ হইতে ত্রিশ ঘণ্টা পর্য্যন্ত আমি জলস্পর্শ করি নাই এবং দুই তিন দিন পর্য্যন্ত কোন খাদ্য গ্রহণ করি নাই। সেনা বাহিনীর এক জন নায়ক হিসাবে আমারই যদি এত কষ্ট সহ্য করিতে হইয়া থাকে, তাহা হইলে আমার অনুবর্ত্তীদের ইহা অপেক্ষা ঢের বেশী কষ্ট সহ্য করিতে হইয়াছে, কিন্তু তাহারা আমার সহিতই চলিয়াছে। যদি চাপে পড়িয়াই ইহাদের এই বাহিনীতে যোগ দান করিতে হইত, তাহা হইলে নিশ্চয় তাহারা এতটা কষ্ট সহ্য করিতে স্বীকৃত হইত না