পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
১৯৫

রাজানুগত্য ভঙ্গের অপরাধে অভিযুক্ত করা যাইতে পারে না। এই প্রশ্ন বর্ত্তমান ক্ষেত্রে অপ্রাসঙ্গিক। সময় সময় এইরূপ দেখা যায় যে, উপনিবেশ সমুহ সম্রাটের আনুগত্য অস্বীকার করিতেছে। যুদ্ধকালে উপনিবেশ সমুহ নিজেদের স্বাধীনতার জন্য সম্রাটের আনুগত্য যে অস্বীকার করিতে পারে তাহার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত হইল বৃটেনের বর্ত্তমানের সর্ব্ববৃহৎ সুহৃদ যুক্তরাষ্ট্র।

 মিঃ দেশাই বলেন যে ঘটনা পরম্পরায় ইহা জানা গিয়াছে যে, আজাদ-হিন্দ-ফৌজ একান্তভাবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীরূপে গঠিত হইয়াছিল। আজাদ-হিন্দ—ফৌজে বলপূর্ব্বক যোগদানের ব্যবস্থা সম্পর্কে যে অভিযোগ করা হইয়াছে তাহাও অপ্রাসঙ্গিক। কারণ অন্যান্য দেশে এখনও পর্য্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্য সংগ্রহ করা হয় এবং যাহারা সৈন্যদলে যোগদান করিতে চাহে না তাহাদের শাস্তি দেওয়া হয়।

 আজাদ হিন্দ ফৌজের আইনকানুন ভারতীয় সামরিক আইনের অনুরূপ ছিল। অবশ্য আজাদ হিন্দ ফৌজের আইনে বেত্রদণ্ড দানের ব্যবস্থা করা হইয়াছিল। যদিও ভারতীয় সামরিক বিধিতে বেত্রদণ্ডের কোন উল্লেখ নাই, তথাপি ইহা বলা যায় যে, ভারতরক্ষা আইন অনুসারে বেত্রদণ্ড দান সম্পর্কে তিনটি অর্ডিনান্স পরবর্ত্তীকালে জারি করা হইয়াছে। বেত্রদণ্ডের ব্যবস্থার জন্য আজাদ হিন্দ ফৌজকে বর্ব্বর বাহিনীরূপে আখ্যাত করা যায় না।

 শ্রীযুত দেশাই তাঁহার সওয়ালের উপসংহারে বলেন “জাতীয় ফৌজে বাধ্যতামূলকভাবে যোগদানের জন্য অত্যাচার অনুষ্ঠিত করা হইয়াছিল বলিয়া যে অভিযোগ করা হইয়াছে তাহার সহিত বর্ত্তমান আসামীগণের কোন সংশ্রব নাই। আসামীরা এই অত্যাচার অনুষ্ঠান সম্পর্কে কোন উৎসাহ প্রদান করেন নাই। এই জন্য আসামীগণকে অভিযুক্ত করা যায় না।”