পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/২৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
২৩৭

করা হয়। গুপ্তচর বিভাগের পরামর্শ অনুসারে শ্রীযুক্ত রাসবিহারী লালকে সরকার পক্ষের কৌঁসুলী নিযুক্ত করা হয়, কিন্তু তাঁহাকে স্বাধীনভাবে আসামীদিগকে জেরা করিতে দেওয়া হয় নাই বলিয়া মামলা চলিতে থাকার সময়েই তিনি সরকারের এই দুর্নীতির প্রতিবাদ স্বরূপ পদত্যাগ করেন। রঞ্জিত সিং নামক একজন শিখ উকিল ব্যতীত আর কোন উকিল এই মামলার সরকার পক্ষ সমর্থন করিতে অস্বীকার করেন।

 বিচারে সমস্ত আসামীদের প্রতি প্রাণদণ্ডের আদেশ হয় এবং উচ্চ আদালত কর্ত্তৃক উক্ত আদেশ সমর্থিত হয়। তৎপর বড়লাট মাত্র শামলাল এবং অবদেশ্বর রায়ের প্রতি প্রাণদণ্ডাজ্ঞা মকুব করিয়া দেন কিন্তু অন্যান্য সমস্ত আসামীকেই দিল্লী জেলে ফাঁসি দেওয়া হয়। শ্যামলাল এবং অবদেশ্বর রায় বেনারেস জেলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করিতেছেন। তাঁহাদিগকে কোন বন্ধুবান্ধবদের সহিত সাক্ষাৎ করিবার সুযোগ পর্য্যন্ত দিতে রাজী নন।

 ছয়জন আজাদী সৈনিকের প্রাণদণ্ড—১৯৪২ সালের শেষ ভাগে মালয় হইতে প্রত্যাবর্ত্তনের পর ২০ জন সৈনিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁহাদের মধ্যে ছয়জনকে বিচারান্তে মাদ্রাজে ফাঁসি দেওয়া হয় এবং একজনকে পাঁচ বৎসর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

 যে পাঁচ জনকে মুক্তি দেওয়া হইয়াছিল তাঁহাদের মধ্যে সাংহাইস্থিত ভারতের স্বাধীনতা সঙ্ঘের প্রচার বিভাগের অধ্যক্ষ মালবারের এম, জি, ওয়ারিয়রও ছিলেন। ১৯৪২ সালে তিনি যখন দক্ষিণ আফ্রিকা হইতে বোম্বাইতে প্রত্যাবর্ত্তন করিতেছিলেন তখন পথিমধ্যে তাঁহাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিছুদিন যাবৎ বোম্বাইতে আটক রাখিবার পর তাঁহাকে লাহোর দুর্গে এবং পরে পাঞ্জাবের স্পেশাল জেলে স্থানান্তরিত করা হয়। অতঃপর তাঁহাকে মাদ্রাজে আনয়ন করা হয় এবং পরে পুনরায় তাঁহাকে বেলারী এবং সর্ব্বশেষে ভেলোরে স্থানান্তরিত করা হয়।