পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৪১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আজাদ হিন্দ ফৌজ
৩৫

 ক্যাপ্টেন শাহ নাওয়াজ খান তখন নীশন যুদ্ধবন্দী ক্যাম্পের নায়ক ছিলেন। তিনি প্রায় দুইশত কিম্বা তিন শত অফিসারের সম্মুখে বক্তৃতা করেন,—ক্যাপ্টেন মোহন সিং-এর হেডকোয়ার্টার্সে এই মর্মে এক প্রস্তাব গৃহীত হইয়াছে, বিভিন্ন ধর্ম্মাবলম্বী হইলেও তাঁহারা সকলেই ভারতীয় এবং তাঁহাদের সকলেরই ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করা কর্ত্তব্য। তিনি অতঃপর উপস্থিত শ্রোতাদিগকে অপরাপর যুদ্ধবন্দীদের নিকট প্রস্তাবটি ব্যাখ্যা করিয়া বলিতে উপদেশ দেন।

 ১৯৪২ সালের জুন মাসে ব্যাঙ্ককে এক সম্মেলন হয়। ভারতীয় সৈন্যদলের বিভিন্ন রেজিমেণ্টের প্রতিনিধিসহ অপর কয়েকজন প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যোগদান করেন। সভার সভাপতিত্ব করেন রাসবিহারী বসু। এই সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবাবলীর একটিতে বলা হয় যে, ভারতবর্ষের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যে ভারতীয় জাতীয় বাহিনী গঠিত হউক। ভারতীয় স্বাধীনতা লীগ ইহার জন্য সৈন্য, অর্থ, খাদ্য ও পোষাক পরিচ্ছদ এবং জাপানী গভর্নমেণ্ট আবশ্যক অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করিবে।

 সিঙ্গাপুরে যে সকল ক্যাম্পে ভাবতীয় যুদ্ধবন্দীদের রাখা হইয়াছিল সেগুলির মধ্যে বিদাদারী ক্যাম্প, সেলেতার ক্যাম্প ও ক্রান্‌জি ক্যাম্প অন্যতম। এই ক্যাম্পের যুদ্ধবন্দীর উপর নির্যাতন চালান হয় এবং জানাইয়া দেওয়া হয়: ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগ না দিলে নির্যাতন চালাইয়া যাওয়া হইবে। ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের যাহারা ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগ দেয়, তাহাদের অনেকে নির্যাতন হইতে রেহাই পাইবার জন্য যোগ দিয়াছিল।

 ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদিগকে ভারতীয় জাতীয় রাহিনীতে যোগ দিতে বাধ্য করিবার জন্য কি ধরণের নির্যাতন চালান হয়, তৎসম্পর্কে স্যার নাসেরওয়ানজী বলেন যে, যাহারা ভারতীয় জাতীয় বাহিনীতে যোগ দিতে অস্বীকার করে তাহাদিগকে পৃথক কয়েদ-শিবিরে লইয়া যাওয়া হয়। তাহাদিগকে খাদ্য দেওয়া