পাতা:আজাদ হিন্দ ফৌজ - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৬
আজাদ হিন্দ ফৌজ

পারিত না, শান্ত্রী কর্ত্তৃক তাহারা প্রহৃত হইত। তাহারা ক্লান্ত হইয়া পড়িলেও তাহাদের রাত্রে ঘুমাইতে দেওয়া হইত না; রাত্রে তাহাদের শিবিরের ভিতর পাহারা দিতে হইত এবং বাহিরে অবস্থিত জাতীয় বাহিনীর শান্ত্রী প্রতি পাঁচ মিনিট অন্তর প্রশ্ন করিত। যদি তাহারা খুব জোরে কিংম্বা খুব আস্তে জবাব দিত তাহা হইলে তাহাদের প্রহার করা হইত এবং এইভাবে তাহাদের সারারাত জাগাইয়া রাখা হইত। তাহাদের জাতীয় বাহিনীর সকল সদস্য এমন কি ঝাড়ুদারদের পর্য্যন্ত সেলাম করিতে হইত।

 একদিন সাক্ষী পাশ দিয়া যাইবার কালে জাতীয় বাহিনীর জনৈক শান্ত্রীকে লক্ষ্য না করায় তাহাকে বন্দুকের বাঁটের আঘাতে ফেলিয়া দেওয়া হয়। তাহাদের সামান্য ভাত দেওয়া হইত এবং তাহাও কাঁকর মিশানো। তাহাদের নির্দ্দিষ্ট সময় ছাড়া যথেষ্ট পরিমাণ পানীয় জলও দেওয়া হইত না। কাঁকর মিশানো চাল সম্বন্ধে শিবিরের অধিনায়ককে বলা হইলে তিনি বলেন যে তাহাদের ওই রকম খাদ্যই পরিবেশন করা হইবে। সাক্ষী তাহাকে বলিয়াছিল, আমাকে হত্যা করুন আমি আর এ অত্যাচার সহ্য করিতে পারিতেছি না। উত্তরে তিনি বলেন, আমি তোমাকে হত্যা করিব না, তুমি জাতীয় বাহিনীতে যোগ দাও। যদি তুমি জাতীয় বাহিনীতে যোগ দাও, তাহা হইলে তোমাকে এই বন্দীশিবির হইতে সরাইয়া লওয়া হইবে এবং তোমার প্রতি ভাল ব্যবহার করা হইবে; আর যদি যোগ না দাও তাহা হইলে মৃত্যু পর্য্যন্ত তোমার প্রতি এইরূপ ব্যবহারই করা হইবে। সাক্ষী এবং তাহার বারজন সাক্ষীকে ঐ শিবিরে সতেরো দিন রাখা হয়। যখন তাহাদের কেহ জাতীয় বাহিনীর ডাক্তারের নিকট অসুস্থতার কথা জানাইত তখনই তাহাদের “এ” এবং “বি” শ্রেণীভূক্ত করা হইত তাহাদের প্রতেককে বার ঘা করিয়া বেত মারা হইত।