পাতা:আজ কাল পরশুর গল্প.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আ জ কা ল প র শু র গ ল্প

ছায়াগুলি বাড়ীর ভিতরে বা ঘরের মধ্যে আত্মগোপন করে থাকে। কোন কোন ছায়া থাকে একেবারে অন্ধকার ঘরের মধ্যে লুকিয়ে, বাপ ভাই স্বামী শ্বশুরের সামনে বার হতে পারে না—স্ত্রীলোক-সুলভ লজ্জায়। কোন বাড়ীতে কয়েকটি ছায়া থাকে এক সঙ্গে, মা, মাসী, খুড়ী, পিসী, মেয়ে, বোন, শাশুড়ী বৌ ইত্যাদি বিবিধ সম্পর্ক সে ছায়াগুলির মধ্যে—এক একজন তারা পালা করে বাইরে বেরোয় কারণ, বাইরে বেরোবার মতো আবরণ একখানিই তাদের আছে।

ভোলা নন্দী কোমরের ঘুন্সীর সঙ্গে দু’ আঙ্গুল চওড়া পট্টি এঁটে তার পাঁচহাতি ধুতিখানা বাড়ীর মেয়েদের দান করেছে। কাপড়খানা যে কোন সাধারণ গতরের স্ত্রীলোকের কোমরে একপাক ঘুরে বুক ঢেকে কাঁধ পর্য্যন্ত পৌঁছতে পারে—কাঁধে সর্ব্বক্ষণ অবশ্য ধরে রাখতে হয় হাত দিয়ে, নইলে বিপদ। ভোলার বৌ ঘাটে যায়। ঘাট থেকে ঘুরে এসে ভিজে কাপড়টি খুলে দেয়। ভোলার মেজ ছেলে পটলের বৌ পাঁচী বা ভোলার মেয়ে শিউলি কাপড়টি পরে ঘাটে যায়।

‘কৎকাল এমনি কয়েদ হয়ে থাক্বো মা?’

পাঁচী হু হু করে কেঁদে ওঠে।

‘আর সয় না।’

বলে’ শাল কাঠের মোটা খঁটিতে মাথাটা ঠকাস্ করে ঠুকে দেয়। ‘আর সয় না, আর সয়না গো!’ বলতে বলতে মাথা ঠুকতে থাকে খুঁটিতে খুঁটিতে, গড়াগড়ি দেয় আগের গোবর-লেপা গুঁড়ো গুঁড়ো মাটিতে, ধূলায় ধূসর হয়ে

২৬