পাতা:আত্মকথা - সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

“দুৰ্গা দুৰ্গা বল ভাই, দুৰ্গা বই আর গতি নাই।” মা প্রপিতামহদেবকে আমার ধর্মশিক্ষার দিকে দৃষ্টি রাখিবার জন্য অনুরোধ করিয়াছিলেন, তাই তিনি আমাকে লইয়া প্রাতে নাচিতেন এবং প্রতিদিন সন্ধ্যাকালে সায়িংসন্ধ্যার পর কাপড় মুড়ি দিয়া নিজ শয্যাতে বসিয়া আমাকে কোলে লইয়া মুখে মুখে ধর্মোপদেশ দিতেন, দেবতাদের স্তৰ প্রভৃতি শিখাইতেন, প্রশ্নোত্তরচ্ছলে অবশ্যজ্ঞাতব্য বিষয় সকল শিখাইতেন। যথা-প্রপিতামহের নাম কি ? প্রশ্ন করিয়াই তদুত্তরে বলিতেন, “ব’ল, শীরামজয় ন্যায়ালঙ্কার।” আমি বাল্যস্বরে বলিতাম, “শ্রীরামজয় ন্যায়ালঙ্কাৱ,” ইত্যাদি। তৎপরে দেবদেবীর যে সকল স্তব মুখস্থ আবৃত্তি করিতেন এবং আমাকে আবৃত্তি করাইতেন, তাহার সকলগুলি মনে নাই। একটি भएना उधांछ, उांश ५aई সর্বমঙ্গলা-মঙ্গল্যে, শিবে, সর্বাের্থসাধিকে, শরণ্যে, ত্র্যম্বকে, গৌরি, নারায়ণি, নমোহস্তু তে । সে সময়কার আর একটি শ্লোক আমার স্মরণ আছে, তাহা মনে হইলে ক্ষোভ মিশ্রিত বিস্ময়ের উদয় হয় । মনে হয়, অল্পদিনের মধ্যে আমাদের গৃহে কি পরিবর্তনই ঘটিয়া গেল ! আমার প্রপিতামহ আমাকে অপরাপর প্রশ্নের মধ্যে প্রশ্ন করিতেন, “বাবা, তোমরা কোন জাতি ১ বলিয়াই বলিতেন, “ব’ল, আমরা ব্রাহ্মণ ।” পরে প্রশ্ন-“কোন শ্রেণীর ব্রাহ্মণ ? আবার উত্তর-'দাক্ষিণাত্য বৈদিক শ্রেণীর ব্রাহ্মণ” । আবার প্রশ্ন--"তোমরা কত দিন ব্রাহ্মণ ?” উত্তর “যাবন্মেরেী স্থিত দেবা, যাবাদ গঙ্গা মহীতলে, চন্দ্রার্কেী গগনে যাবৎ, তাবদ্বিপ্রকুলে বয়ম।” অর্থাৎ, দেবগণ যতদিন মেরুতে আছেন, গঙ্গা যতদিন পৃথিবীতে আছেন, চন্দ্র সূর্য যতদিন আকাশে আছেন, ততদিন আমরা ব্রাহ্মণকুলে আছি। এখন ভাবি, তিনি কি ভাবিয়াছিলেন, আর আমি কোথায় আসিয়া দাড়াইয়াছি । আমি জ্বরে পড়িলে বা অন্য কোন প্রকার পীড়াতে আক্রান্ত হইলে আমার মা, সন্ধ্যাকালে আমাকে লইয়া তাহার ক্রোড়ে বসাইয়া দিতেন, এবং পীড়ার কথা জানাইতেন। তৎপরে প্রপিতামহদেব আমার দেহে হাত বুলাইয়া ঝাড়িতে আরম্ভ } করিতেন, সমগ্র দেহে ফুৎকার দিতেন, ও মুখে-মুখে ইষ্টদেবতার স্তব আবৃত্তিকৱিতেন । আশ্চর্যের বিষয় এই, বাড়িয়া দেওয়াতেই অনেক সময়ে বোধ হয়। আমার জম্বর সারিয়া যাইত। এইজন্য জ্বরে আমার গাত্রেজ্বালা উপস্থিত হইলেই, আমি “পো-র কাছে নে যা” বলিয়া কাদিতাম । \9ጋም